জেনে নিন পেঁয়াজের পাতায় স্বাস্থ্য উপকার
চাইনিজ বা কন্টিনেন্টাল খাবার পছন্দ করেন কি আপনি? এই খাবারগুলো তৈরির উপাদান হচ্ছে পেঁয়াজ পাতা। ৫০০০ বছর আগে চিনে প্রথম উৎপন্ন হয় পেঁয়াজ পাতা। পেঁয়াজ পাতা ও পেঁয়াজের কন্দ সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর। এতে উচ্চ মাত্রায় সালফার থাকে যা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। এই নরম কচি পেঁয়াজে ক্যালরি কম থাকে।
যেসব ভিটামিন পাওয়া যায়ঃ
পেঁয়াজ পাতায় ভিটামিন ‘সি’, ভিটামিন বি ১২ এবং থায়ামিন সমৃদ্ধ। পেঁয়াজের কন্দে ভিটামিন ‘এ’ এবং ভিটামিন ‘কে’ থাকে। এছাড়াও কপার, ফসফরাস, ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম, ক্রোমিয়াম, ম্যাঙ্গনিজ ও ফাইবার থাকে। কোয়ারসেটিন নামক ফ্ল্যাভনয়েডের উৎস এই পেঁয়াজ পাতা।
আসুন এবার তাহলে পেঁয়াজ পাতার স্বাস্থ্য উপকারিতাগুলো জেনে নিনঃ
১। পেঁয়াজ পাতার অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ফ্রি র্যাডিকেলের কাজে বাধা প্রদান করে কোষকলা এবং ডিএনএ’র ক্ষতি রোধ করতে পারে।
২। পেঁয়াজ পাতার ভিটামিন ‘সি’ কোলেস্টেরল ও রক্ত চাপের উচ্চমাত্রাকে কমাতে সাহায্য করে যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
৩। পেঁয়াজ পাতার সালফার করোনারি হার্ট ডিজিজের ঝুঁকি কমিয়ে থাকে।
৪। শ্বাসযন্ত্রের কাজে সহায়ক অ্যান্টি ভাইরাল ও অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান থাকায় পেঁয়াজ পাতা সাধারণ ঠান্ডা, ফ্লু ও ভাইরাল ইনফেকশনের ঘরোয়া প্রতিকার হিসাবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। শ্বাসযন্ত্রের কাজকে উদ্দীপিত করা ও কফ বের করে দিতে সাহায্য করে পেঁয়াজ পাতা।
৫। হাড়ের ঘনত্ব বৃদ্ধি করে-পেঁয়াজ পাতায় উচ্চ মাত্রায় ভিটামিন ‘সি’ ও ভিটামিন ‘কে’ থাকে যা হাড়ের স্বাভাবিক কার্যাবলীর জন্য প্রয়োজনীয়। ভিটামিন ‘সি’ কোলাজেনের সমন্বয় সাধনে কাজ করে যা হাড়কে শক্তিশালী করে। অন্যদিকে ভিটামিন ‘কে’ হাড়ের ঘনত্ব রক্ষায় প্রধান ভূমিকা পালন করে।
৬। স্বাভাবিক দৃষ্টি রক্ষণাবেক্ষণ করে-লুটেইন ও জেনান্থিন নামক ক্যারোটিনয়েড-এর উপস্থিতির জন্য পেঁয়াজ পাতা চোখের প্রতিরক্ষায় প্রভাব বিস্তার করে। চোখের স্বাস্থ্য রক্ষায় এবং স্বাভাবিক দৃষ্টির রক্ষণাবেক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে ভিটামিন ‘এ’-যা পেঁয়াজ পাতার সবুজ অংশে থাকে।
৭। ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়- সবুজ পেঁয়াজের সালফার যাতে অ্যালইন সালফাইড থাকে তা কোলন ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়। সবুজ পেঁয়াজে ক্যানসার রোধী উপাদান ফ্ল্যাভনয়েড থাকে।
৮। পাকস্থলীর জটিলতা প্রতিরোধ করে- সবুজ পেঁয়াজ গ্যাস্ট্রো ইন্টেস্টিনাল সমস্যা প্রশমনে উপকারী ভূমিকা রাখে।
৯। ডায়ারিয়া এবং পাকস্থলীর জটিলতার ক্ষেত্রে শক্তিশালী প্রাকৃতিক প্রতিকার হচ্ছে সবুজ পেঁয়াজ পাতা।
১০। অধিকন্তু রুচি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। পেঁয়াজ পাতায় বিদ্যমান উচ্চ মাত্রার ফাইবার খাদ্যবস্তু হজমে সহায়তা করে।
১১। রক্ত সংহবনের মাত্রার উন্নতি করে এবং শরীরে ভিটামিন বি ১-এর শোষণের মাধ্যমে চাপ ও ক্লান্তি কমায়।
১২। শরীরের কোষকলার প্রদাহ ও ক্ষতি থেকে রক্ষা করে পেঁয়াজ পাতার ভিটামিন ‘সি’।
১৩। পেঁয়াজ পাতায় অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি ও অ্যান্টি হিস্টামিন উপাদান থাকে যা আর্থ্রাইটিস ও অ্যাজমার চিকিৎসায় ভালো ফল দেয়, বিপাকে সহায়তা করে।
তাই স্বাস্থ্যের সুরক্ষায় নিয়মিত পেঁয়াজ পাতা খান।