মসুর ডালের স্বাস্থ্য উপকারীতা
প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় অপরিহার্য এক খাদ্য উপাদান হলো ডাল। বিভিন্ন প্রকারের ডাল নানা পুষ্টিগুণে ভরপুর। প্রোটিনের চমৎকার উৎস হওয়ায় তা স্বাস্থ্যের জন্য অনেক ভালো। নিরামিষভোজীদের প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করতে এর বিকল্প নেই। আজকের লেখাতে থাকছে মসুর ডালের স্বাস্থ্য উপকারীতা।১৩ হাজার বছরের আগের কথা। সেই সময় থেকেই মসুর ডাল খাওয়া শুরু হয়।
আসুন তাহলে এখন জেনে নেওয়া যাক মসুর ডালের স্বাস্থ্য উপকারীতাগুলোঃ
১। গবেষণায় একথা প্রমাণিত হয়েছে যে মসুর ডালে উপস্থিত ফাইবার, রক্তে মিশে থাকা বাজে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে বিশেষ ভূমিকা নেয়। ফলে একদিকে যেমন হঠাৎ হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা কমে, তেমনি স্ট্রোকের সম্ভাবনাও হ্রাস পায়।
২। মসুর ডালে ফাইবার ছাড়াও রয়েছে ফলেট এবং ম্যাগনেসিয়াম, যা হার্টের কর্মক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে। ফলে কোনও ধরনের হার্টের রোগ হওয়ার সম্ভাবনা কমে।প্রসঙ্গত, ফলেট শরীরে হমোসিস্টেনিনের মাত্রা কমায়। ফলে হার্ট দীর্ঘদিন পর্যন্ত কর্মক্ষম থাকে। অন্যদিকে, ম্যাগনেসিয়াম সারা শরীরে অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্তের সরবরাহ বাড়িয়ে তোলে। এমনটা হওয়ার কারণে শুধু হার্ট নয়, শরীরের প্রতিটি ভাইটাল অর্গানের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
৩। পরিবারে ডায়াবেটিস রোগের ইতিহাস রয়েছে? তাহলে তো একদিনও ডাল ছাড়া ভাত খাওয়া চলবে না। কারণ ডালে উপস্থিত সলেবল ফাইবার ব্লাড সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। ফলে ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা যেমন কমে, তেমনি ইনসুলিন রেজিস্টেন্স এবং হাইপোগ্লাইসেমিয়ার মতো সমস্যাও মাথা চাড়া দিয়ে ওঠার সুযোগ পায় না।
৪। যেমনটা আগেও অলোচনা করা হয়েছে, মুসুর ডালে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, যা হজমে সহায়ক অ্যাসিডের ক্ষরণ বাড়িয়ে তোলে। ফলে বদ-হজম সহ গ্যাস-অম্বলের মতো সমস্যাও কমতে শুরু করে। শুধু তাই নয়, ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রম এবং ডাইভারটিকিউলোসিসের মতো রোগের প্রকোপ কমাতেও বিশেষ ভূমিকা নেয়।
৫। মসুর ডালে উপস্থিত ২৬ শতাংশ ক্যালরি আদতে প্রোটিন হিসেবে আমাদের শরীরে প্রবেশ করে। ফলে শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় এই উপাদানের ঘাটতি দূর হয়। সেই সঙ্গে নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও কমে। তাই যারা মাছ-মাংস খেতে খুব একটা ভালবাসেন না, তারা ডালের সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতাতেই পারেন।
৬। শরীরে ফাইবার এবং কার্বোহাইড্রেটের ঘাটতি যত কমবে, তত এনার্জি level বাড়তে থাকবে। তাই যদি অল্পতেই ক্লান্ত হয়ে পরার মতো লক্ষণ দেখা দেয়, তাহলে বেশি বেশি করে মুসুর ডাল খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন সমস্যা কমে গেছে। কারণ এই ডালটিতে যেমন প্রচুর পরিমাণে ফাইবার আছে, তেমনি আছে কার্বোহাইড্রেটও।
এছাড়াও পেট যত ভরা থাকবে, তত খাবার ইচ্ছা কমবে। আর খাবার যত কম খাওয়া হবে, তত ওজন বাড়ার আশঙ্কা কমবে। মুসুর ডালে উপস্থিত কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, উপকারি খনিজ এবং ফাইবার অনেকক্ষণ পর্যন্ত পেটকে ভরিয়ে রাখে। ফলে কিছু সময় অন্তর অন্তর যেমন খাবার খাওয়ার ইচ্ছা কমে, তেমনি জাঙ্কফুড খাওয়ার প্রবণতাও হ্রাস পায়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ওজন কমতে শুরু করে।