প্রতিদিন গাজরের রস খাওয়ার উপকারীতা
গাজর একটি মজাদার সবজি। গাজর ঝাল, মিষ্টি সব ধরণের খাবারেই ব্যবহার করা হয়। রান্না ছাড়াও কাঁচা কিংবা সালাদেও গাজর খাওয়া হয়। তবে গাজরের রস কিন্তু ভীষণ উপকারী। যে ভাবেই এই সবজিটি খাওয়া হোক এটি সব ভাবেই সুস্বাদু। আকর্ষনীয় রঙ ও স্বাদের জন্য ছোট বড় সবার কাছেই এই সবজিটি জনপ্রিয়। গাজরের প্রচুর পুষ্টিগুণ আছে। শরীর ও ত্বক দুটির জন্যই গাজর খাওয়া খুবই উপকারী। প্রতি ১০০ গ্রাম গাজরে আছে ক্যারোটিন ১০,৫২০ মাইক্রোগ্রাম, শর্করা ১২.৭ গ্রাম, আমিষ ১.২ গ্রাম, জলীয় অংশ ৮৫.০ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ২৭.০ মি. গ্রা., আয়রণ ২.২ মি. গ্রা., ভিটামিন বি১ ০০.০৪ মি. গ্রা., ভিটামিন বি২ ০.০৫ মি. গ্রা., চর্বি ০.২ গ্রাম, ভিটামিন সি ১৫ মি. গ্রা., আঁশ ১.২ গ্রাম, অন্যান্য খনিজ ০.৯ গ্রাম, খাদ্যশক্তি ৫৭ ক্যালরি। আজকের লেখাতে থাকছে মুলত প্রতিদিন গাজরের রস খাওয়ার উপকারীতা গুলো।
আসুন তাহলে এবার জেনে নেওয়া যাক প্রতিদিন গাজরের রস খাওয়ার উপকারীতাঃ
১। হাড়ের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে: বুড়ো বয়সে আর্থ্রাইটিসে যদি শয্যাশায়ী হতে না চান, তাহলে এখন থেকেই গাজরের রস খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন উপকার মিলবে। কারণ এর মধ্যে থাকা ক্যালসিয়াম, হাড়ের শক্তি এতটা বাড়িয়ে দেয় যে বয়সের সঙ্গে সঙ্গে হাড় দুর্বল হয়ে পরার আশঙ্কা হ্রাস পায়। সেই সঙ্গে নানাবিধ হাড়ের রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও কমে।
২। অ্যান্টিঅক্সিডেন্টর চাহিদা মেটে: শরীর থেকে সব ধরনের টক্সিক উপাদানদের বের করে দেওয়ার মধ্যে দিয়ে ক্যান্সার রোগকে দূরে রাখতে এই উপাদানটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। সেই সঙ্গে শরীরের রোগ প্রতিরোধী ব্যবস্থাকে এতটাই শক্তিশালী করে তোলে যে ছোট-বড় কোনও রোগই ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না। সেই সঙ্গে সংক্রমণে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও হ্রাস পায়। প্রসঙ্গত, শীতকালে নানা কারণে আমাদের ইমিউন পাওয়ার খুব দুর্বল হয়ে যায়। এই কারণেই তো নানা রোগ ঘাড়ে চেপে বসে। এবার বুঝেছেন তো বছরের এই সময় বেশি করে গাজরের রস খাওয়ার পরামর্শ কেন দেওয়া হয়।
৩। ত্বকের সৌন্দর্য বাড়ে: শীতকাল মানেই স্কিনের আদ্রতা হারিয়ে যাওয়া এবং সেই সঙ্গে নানাবিধ ত্বকের রোগের মাথা চাড়া দিয়ে ওঠা। এমন পরিস্থিতিতে ত্বককে বাঁচাতে পারে একমাত্র গাজর। কারণ এই সবজিটির মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের অন্দরে জমে থাকা টক্সিক উপাদানের শরীর থেকে বার করে দেয়। সেই সঙ্গে কোলাজেনের উৎপাদন বাড়িয়ে দেয়। ফলে ত্বক উজ্জ্বল এবং প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে। তবে এখানেই শেষ নয়, গাজরের অন্দরে থাকা একাধিক ভিটামিন এবং মিনারেল ড্রাই স্কিনের সমস্যা দূর করতে, কালো কালো ছোপ দাগ কমাতে এবং বলিরেখা ভ্যানিশ করতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
৪। ডায়াবেটিসকে নিয়ন্ত্রণে রাখে: গাজরের রসে থাকা ভিটামিন এবং মিনারেল ইনসুলিনের কর্মক্ষমতা এতটা বাড়িয়ে দেয় যে ডায়াবেটিস রোগ ধারে কাছে ঘেঁষার সুযোগটুকু পায় না।
৫। হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে: ১০০ গ্রাম গাজরের ভেতরে থাকে দিনের চাহিদার প্রায় ৩৩ শাতাংশ ভিটামিন এ, ৯ শতাংশ ভিটামিন সি এবং ৫ শতাংশ বি৬। সেই সঙ্গে থাকে প্রচুর মাত্রায় থাকে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এই সবকটি উপাদান হার্টের কর্মক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই হার্টের কোনও ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা কমে যায়।