লটকন এক প্রকার টক মিষ্টি ফল। এর বৈজ্ঞানিক নাম Baccaurea motleyana। লটকন নানা নামে পরিচিত, যেমন- Rambai, Rambi, Mafai-farang, Lamkhae, Ra mai ইত্যাদি। গাছটি দক্ষিণ এশিয়ায় বুনো গাছ হিসেবে জন্মালেও বাংলাদেশ, মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডে বানিজ্যিক চাষ হয়। লটকন বৃক্ষ ৯-১২ মিটার লম্বা হয়, এর কান্ড বেটে এবং উপরাংশ ঝোপালো। পুং এবং স্ত্রী গাছ আলাদা। এতে আলাদা ধরণের হলুদ ফুল হয়, উভয় রকম ফুলই সুগন্ধি। ফলের আকার দুই থেকে পাঁচ সেমি হয়, যা থোকায় থোকায় ধরে। ফলের রঙ হলুদ। ফলে ২-৫ টি বীজ হয়, বীজের গায়ে লাগানো রসালো ভক্ষ্য অংশ থাকে, যা জাতভেদে টক বা টকমিষ্টি স্বাদের। এই ফল সরাসরি খাওয়া হয় বা জ্যাম তৈরি করা হয়। এর ছাল থেকে রঙ তৈরি করা হয় যা রেশম সুতা রাঙাতে ব্যবহৃত হয়।এর কাঠ নিম্নমানের। ছায়াযুক্ত স্থানেই এটি ভাল জন্মে।লটকনের বেশ কয়েকটি নাম রয়েছে। যেমন: হাড়ফাটা, ডুবি, বুবি, কানাইজু, লটকা, লটকাউ, কিছুয়ান ইত্যাদি। লটকন গাছ বাংলাদেশ সহ অনেক জায়গায় জন্মে। লটকন ঔষধ হিসেবে ও ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
পুষ্টিগুণ:
লটকনে আছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টিগুণ রয়েছে। লটকনে নানা ধরনের ভিটামিন ‘বি'। এতে ভিটামিন বি-১ এবং ভিটামিন বি-২ আছে যথাক্রমে ১০ দশমিক ০৪ মিলিগ্রাম এবং ০.২০ মিলিগ্রাম। পাকা লটকন খাদ্যমানের দিক দিয়ে খুবই সমৃদ্ধ। প্রতি ১০০ গ্রাম লটকনের কোয়ায় খাদ্যশক্তি থাকে প্রায় ৯২ কিলোক্যালরি। লটকনে ভিটামিন ‘সি' আছে প্রচুর। এছাড়াও লটকনে আরো রয়েছে খনিজ, শর্করা ও লৌহ।
উপকারিতা:
১। লটকন খেলে বমি বমি ভাব দূর হয়।
২। লটকন নিয়মিত খেলে তৃষ্ণা নিবারণ হয়।
৩। লটকন গাছের ছাল ও পাতা একসাথে সেদ্ধ করে ক্বাথ বানিয়ে খেলে চর্মরোগ ভালো হয়।
৪। লটকন খেলে মানসিক চাপ কমে ও ঘুম ভালো হয়।
৫। লটকন গাছের শুকনো পাতা গুঁড়ো করে খেলে দ্রুত ডায়রিয়া সেরে যায়।
৬। লটকন গাছের পাতা ও মূল খেলে পেটের পীড়া ও পুরান জ্বর নিরাময় হয়।
৭। এই ফল খেলে মুখের রুচি বাড়ে।
৮। গনোরিয়া রোগ হলে লটকন ফলের বীজ খেলে নিরাময় হয়।