ঝিঙা | 20fours
logo
আপডেট : ২০ নভেম্বর, ২০১৮ ২৩:৪৫
ঝিঙা
ঝিঙা
Desk

ঝিঙা

ঝিঙা (Luffa) একটি বর্ষজীবী লতা। এর বৈজ্ঞানিক নাম : Luffa acutangula (L.) Roxb। এটি Cucurbitaceae গোত্রের অন্তর্ভূক্ত। এর লতা বেশ অনেক দূর পর্যন্ত বিস্তৃত হয়। আঁকড়ির সাহায্যে এই গাছ উপরে উঠে এবং জালের মতো ছড়িয়ে পড়ে। আঁকড়িগুলো লম্বায় প্রায় ২-৩ ফুট পর্যন্ত হয়ে থাকে। এর পাতার ব্যাস প্রায় ৮ ইঞ্চি হয়ে থাকে। পত্রের প্রান্তদেশে ৫টা কোণা আছে। পাতাগুলো কোমল লোম দ্বারা আবৃত। পাতার বোঁটা প্রায় ২ ইঞ্চি লম্বা হয়। এর পুং পুষ্পদণ্ড প্রায় ৬ ইঞ্চি লম্বা হয়। ফুল পুষ্পদণ্ডের উপরে থাকে এবং এর সাথে যুক্তাবস্থায় থাকে পাপড়ি। এতে তিনটি পুংকেশর থাকে। স্ত্রীফুল পৃথক পৃথক অবস্থায় থাকে। স্ত্রীফুল ১-৩ ইঞ্চি লম্বা হয়। ফুলের রঙ হলুদ। এর ফল ৫-১০ ইঞ্চি পর্যন্ত লম্বা হয়। ফলের গায়ে ১০টি উঁচু শিরা থাকে। ফলের ভিতর ঘনভাবে বীজ বিন্যাস্ত থাকে। বীজের রঙ কালো। ঝিঙা সবজি হিসেবে খাওয়া হয়। বাংলাদেশে এই গাছের চাষ করা হয় মার্চ-এপ্রিল মাসে এবং গ্রীষ্মের শেষে এর ফুল ও ফল হয়। বর্ষাকালের প্রায় শেষ পর্যন্ত ঝিঙা পাওয়া যায়। ঝিঙা চাষের জন্য বেলে দো-আঁশ মাটি ভালো। ঝিঙা বাংলাদেশ ও ভারতসহ সর্বত্র চাষ করা হয়ে থাকে। ঝিঙার সবকিছুই ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

পুষ্টিগুন:

ঝিঙায় রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণ। কারন প্রতি ১০০ গ্রাম ঝিঙায় রয়েছে শর্করা ৪.৩ গ্রাম, আমিষ ১.৮ গ্রাম, জলীয় অংশ (পানি) ৯৫ গ্রাম, খাদ্য শক্তি ৩০ কিলোক্যালরী, খনিজ লবণ, ০.৩ গ্রাম, চর্বি ০.৬ গ্রাম। ভিটামিন এ ৬৭০ মাইক্রোগ্রাম, ভিটামিন বি-১ বা থায়ামিন ০.১১ মিলিগ্রাম, ভিটামিন-২ বা রাইবোফ্লাভিন ০.০৪ মিলিগ্রাম, নায়াসিন বা ভিটামিন বি-৬ ০.৩ মিলিগ্রাম, ভিটামিন সি ৬ মিলিগ্রাম, ক্যালসিয়াম ৪০ মিলিগ্রাম, ফসফরাস ৪০ মিলিগ্রাম, পটাশিয়াম ৪০ মিলিগ্রাম, আয়রণ ০.৫ মিলিগ্রাম, আঁশ ০.৫ গ্রাম, ভিটামিন-ই ১.২০ মিলিগ্রাম।

উপকারিতা:

১। ঝিঙা খেলে দাঁতের মাড়ি নানা রোগ ও এন্টিঅক্সিডেন্টকে শক্তিশালী করে।

২। ঝিঙায় আঁশ থাকে তাই ঝিঙা নিয়মিত খেল সহজে হজম হয় এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়।

৩। তেতো ঝিঙে কৃমি ও অর্শ রোগে বেশ উপকার  করে।

৪। ঝিঙা নিয়মিত খেলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে।

৫। তেতো ঝিঙের রস লাগালে শরীরের যেকোন ঘা ভালো হয়।

৬। ঝিঙে লতার শিকড় গরুর দুধে বা ঠান্ডা পানিতে ঘষে সকাল বিকাল খেলে পাথুরী রোগ দূর হয়

৭। যাদের পেটে বেশী গ্যাস জমা হয় তারা ঝিঙের তরকারী ঝোল সহ নিয়মিত খান উপকার পাবেন।

৮। ঝিঙার পরিপক্ক বীজ বেটে পানির সাথে মিশিয়ে খেলে বমি বমি ভাব ভালো হয়।