শসা (Cucumber) এটি একটি লতানো উদ্ভিদ। এর বৈজ্ঞানিক নাম Citrullus colocynthis। এটি Cucurbitaceae এর পরিবারভুক্ত। শসা লম্বাটে আকৃতির এবং প্রায় ১০-১২ ইঞ্চি লম্বা হয়ে থাকে। এর বাইরের রঙ সবুজ। তবে পাকলে হলুদ হয়। ভেতরে সাদাটে সবুজ রঙের হয়, এবং মধ্যভাগে বিচি থাকে। এটি কাঁচা খাওয়া হয় বা সালাদ তৈরীতে ব্যবহার করা হয়। এর উৎপত্তি ভারতবর্ষে হলেও বর্তমানে পৃথিবীর প্রায় সব জায়গাতেই জন্মে। এটি সাধারণত গরমের সময় বেশি পাওয়া যায়। বেশ কয়েক জাতের শসা রয়েছে। উর্বর দো-আঁশ মাটি ও অম্লক্ষারত্ব ৫.৫-৬.৮ শসা উৎপাদনের জন্য উপযোগী। ২৫-৩০ সেঃ গড় তাপমাত্রায় শসা সবচেয়ে ভাল জন্মে। ফেব্রুয়ারি থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত শসার বীজ বপন করা ভাল।বাংলাদেশে শসা প্রধানত সালাদ হিসেবে খাওয়া হয়। শসাতে পানি আছে শতকরা ৯৫ভাগ। ফলে এটি শরীরের আর্দ্রতা ধরে রাখতে পারে এবং ভেতরের তাপমাত্রাকে নিয়ন্ত্রণ করে দেহ শীতল রাখতে সহায়তা করে। শসার আদি নিবাস ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল, এশিয়া এবং তুরস্ক। বাংলাদেশের সব অঞ্চলে শসার চাষ করা হয়ে থাকে। শসা ঔষধ হিসেবেও ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
রাসায়নিক উপাদান:
শসাতে রয়েছে সিকোইসোলারিসিরেসিনোল, ল্যারিসিরেসিনোল ও পিনোরেসিনোল যা আমাদের শরীরের অনেক ঘাটতি পূরন করে।
পুষ্টিগুণ:
শসায় অনেক পুষ্টিগুন রয়েছে। প্রতি ৩০০ গ্রাম শসায় প্রায় ১১ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ২ গ্রাম প্রোটিন, ২ গ্রাম ফাইবার, দিনের চাহিদার প্রায় ১৪ শতাংশ ভিটামিন সি এবং ৬২ শতাংশ ভিটামিন কে থাকে। সেই সঙ্গে থাকে দিনের চাহিদার ১০ শতাংশ ম্যাগনেসিয়াম, ১৩ শতাংশ পটাশিয়াম এবং ১২ শতাংশ মেঙ্গানিজ রয়েছে।
উপকারিতা:
১। শসায় পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ও ফাইবার থাকার কারণে শসা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে।
২। শসা নিয়মিত খেলে কিডনি, ইউরিনারি, ব্লাডার, লিভার ও প্যানক্রিয়াস ভালো থাকে।
৩। নিয়মিত শসার সালাদ খেলে অতিরিক্ত চর্বি কমে ও ওজন নিয়ন্ত্রনে থাকে।
৪। শসার রস খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে থাকে।
৫। শসার রস আলসার, গ্যাস্ট্রাইটিস, অ্যাসিডিটির ক্ষেত্রেও উপকারী।
৬। শসা নিয়মিত খেলে নখ ভালো থাকে, দাঁত ও মাড়ির সমস্যা সমাধান হয়।
৭। গাজরের রসের সাথে শসার রস মিশিয়ে খেলে ব্যথার উপকার হবে।
৮। নিয়মিত শসা খেলে ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে।
৯। শসা পেস্ট করে মুখে লাগলে মুখের উজ্জ্বলতা বাড়ে এবং চোখের নিচের কালো দাগ দূর হয়।
১০। শসাতে পানি আছে শতকরা ৯৫ভাগ। এটি শরীরের আর্দ্রতা ধরে রাখে এবং শরীরের ভেতরের তাপমাত্রা কে নিয়ন্ত্রণ করে।
১১। খোসাসহ শসা খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য হয় না।