আম (Mango) খুব পরিচিত একটি ফল। এর বৈজ্ঞানিক নাম Mangifera indica। এটি Anacardiaceae পরিবারের সদস্য। আম গাছ সাধারণত ৩৫-৪০মি: (১১৫-১৩০ ফিট) লম্বা এবং সর্বোচ্চ ১০মি: (৩৩ ফিট) ব্যাসার্ধের হয়ে থাকে। আম গাছ বহু বছর বাঁচে, এর কিছু প্রজাতিকে ৩০০ বছর বয়সেও ফলবতী হতে দেখা যায়। এর প্রধান শিকড় মাটির নীচে প্রায় ৬মি: (২০ ফিট) গভীর পর্যন্ত যায়। আম গাছের পাতা চিরসবুজ, সরল, পর্যায়ক্রমিক, ১৫-৩৫ সে.মি. লম্বা এবং ৬-১৬ সে.মি. চওড়া হয়ে থাকে; কচি পাতা দেখতে লালচে-গোলাপী রং এর হয়। আমের মুকুল বের হয় ডালের ডগা থেকে, মুকুল থেকে শুরু করে আম পাকা পর্যন্ত প্রায় ৩-৬ মাস সময় লাগে।কাঁচা অবস্থায় রং সবুজ এবং পাকা অবস্থায় হলুদ রং হয়ে থাকে। আমের বিভিন্ন জাত আছে। যেমন: ফজলি, ল্যাংড়া, গোপালভোগ, খিরসা, অরুনা, আম্রপালি, মল্লিকা, সুবর্নরেখা, মিশ্রিদানা, নিলাম্বরী, কালীভোগ, কাঁচামিঠা, আলফানসো, বারোমাসি, তোতাপূরী, কারাবাউ, কেঊই সাউই, গোপাল খাস, কেন্ট, সূর্যপূরী, পাহুতান, ত্রিফলা, হাড়িভাঙ্গা, ছাতাপরা, গুঠলি, লখনা, আদাইরা, কলাবতী। আমগাছ বাংলাদেশ সহ ভারত,ব্রাজিল, ওয়েস্ট ইন্ডিজ বা মেক্সিকো, চীন, পাকিস্তান, অস্ট্রেলিয়া, উত্তর-দক্ষিণ ও মধ্য আমেরিকা, দক্ষিণ-পশ্চিম ও মধ্য আফ্রিকা মহাদেশে আম গাছ জন্মে।
পুষ্টিগুণ:
স্বাদে, পুষ্টিতে আম অতুলনীয়। তাই আমকে বলা হয় ফলের রাজা । আমে প্রচুর ভিটামিন ‘এ’ বা ক্যারোটিন, ভিটামিন ‘সি’, খনিজ পদার্থ ও ক্যালোরি রয়েছে ।ভিটামিন ‘এ’ এর দিক থেকে আমের স্থান পৃথিবীর প্রায় সব ফলেরই উপরে ।
উপকারিতা :
১। আম মধুর সঙ্গে মিশিয়ে খেলে ক্ষয়রোগ,প্লীহা ভালো হয়।
২। আমের আটির শাঁস বেটে খেলে মেহ ও অতিসার ভালো হয়।
৩। শিশুদের আমাশয় হলে আমের আটির শাঁস বেটে নাভির চারপাশে প্রলেপ দিলে উপকার পাওয়া যায়।
৪। আমের আটির শাঁস বেটে মধুর সাথে খেলে বমি বন্ধ হয় যায়।
৫। কাঁচা আম পুড়িয়ে খেলে 'লু ' লেগে শরীর খারাপ হলে ভালো ফল পাওয়া যায়।
৬। কাঁচা আম ক্যারোটিন ও ভিটামিনএ সমৃদ্ধ, যা চোখের দৃষ্টি বাড়াতে সাহায্য করে, রাতকানা রোগের হাত থেকে রক্ষা করে এবং চোখ ভালো রাখে ।
৭। আম নিয়মিত খেলে শরীর সতেজ থাকে এবং ঘুম ভালো হয়।
৮। আমে বেটাক্যারোটিন, ভিটামিন ই এবং সেলেনিয়াম থাকায় হার্টের সমস্যা প্রতিরোধে সাহায্য করে।
৯। আম খেলে স্তনক্যান্সার, লিউকেমিয়া, কোলনক্যান্সার, প্রোস্টেটক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি কম থাকে।
১০। দাঁত, নখ, চুল, মজবুত করার জন্য আমের খনিজ লবণ উপকারী ভূমিকা পালন করে।
১১। কাঁচা আমে প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকে। যার ফলে রক্তস্বল্পতা সমস্যা দূর হয়, আবার শরীরের রক্ত পরিষ্কার থাকে।