ছাতিম | 20fours
logo
আপডেট : ২৪ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:৫৫
ছাতিম
ছাতিম
Desk

ছাতিম

ছাতিম (Blackboard tree, Indian devil tree) একটি চিরসবুজ বৃক্ষ। এর বৈজ্ঞানিক নাম Alstonia scholaris L. R. Br ও সংস্কৃত সপ্তপর্ণ, 'সপ্তপর্ণা। এটি Apocynaceae গোত্রের অন্তর্গত Alstonia গণের অন্তর্ভুক্ত। ছাতিম গাছ ৪০ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। গাছটি বহুশাখাবিশিষ্ট। এর শাখা পত্রমূলাবর্তবিশিষ্ট। একই মূলাবর্তে ৪ থেকে ৭টা পর্যন্ত পাতা থাকে। পাতাগুলো ১০ থেকে ১৫ সে.মি. লম্বা হয়। চওড়া হয় ২-৪ সেন্টিমিটার।  ছাতিম পাতা চামড়ার মতো পুরু। এর উপরের দিক চকচকে আর তলার দিক ধুসর থাকে। পাতায় সূক্ষ্ণ লোম থাকে। এর বোঁটা ০.২৫-০.৬০ সেন্টিমিটার হয়। পত্রশাখার শীর্ষে সবুজ মেশানো সাদা রংয়ে থোকায় থোকায় ক্ষুদ্রাকৃতি ফুল ফোটে। এর পুষ্পদণ্ড ২-৩ সেন্টিমিটার লম্বা হয়। এর ফল চ্যাপ্টা। ফলগুলো ৩০ থেকে ৬০ সে.মি. লম্বা হয়। এক বৃন্তে সাধারণত দুটো করে ফল ঝুলে থাকে। ছাতিমের বীজ লম্বাটে ডিম্বাকার, কিনারায় আঁশ থাকে আর শেষ প্রান্তে এক গোছা চুল থাকে। ফল পাকলে ফেটে যায় এবং বাতাসে বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ে। এর ফুল ধরে শরৎকালে এবং ফল ধরে শীতকালে।

ছাতিম গাছের অভ্যন্তরে দুধের মতন সাদা এবং অত্যন্ত তেতো কষ থাকে। এর ছাল গন্ধহীন, অসমতল ও ধুসর।  কাঠের রঙ সাদা। এর কাঠ বেশ নরম। এই গাছ বাংলাদেশ সহ ভারত উপমহাদেশ, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, নেপাল, শ্রীলংকা, পাকিস্তান, মায়ানমার, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, পাপুয়া নিউ গিনি, ফিলিপাইনে এই গাছ প্রচুর জন্মে। ছাতিম গাছের পাতা, ছাল, ফুল ও ফল ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

উপকারিতা:

১। ছাতিম গাছের ছালচূর্ণ করে গুলঞ্চের রস মিশিয়ে খেলে এবং এই গাছের ছাল থেঁতো করে সিদ্ধ করে এই পানি দিয়ে গোসল করলে কুষ্ঠ রোগ ভালো হয়।

২। জ্বর হলে ছাতিম গাছের ছাল সিদ্ধ করে সেই পানি দুইবেলা সেবন করলে উপকার পাওয়া যায়।

৩। ছাতিম গাছের রস গরম দুধের সাথে মিশিয়ে খেলে কাশি ভালো হয়ে যায়।

৪। দাঁতে পোকার যন্ত্রণা হলে ছাতিমের আঠা পোকা লাগা দাঁতের ছিদ্রে দিন উপকার পাবেন।

৫। হাঁপানি হলে ছাতিমের ফুল চূর্ণ করে পিপুল চূর্ণ করে দইয়ের সাথে মিশিয়ে খেলে হাঁপানি কমে যায়।

৬। বাতের ব্যথা হলে ছাতিমের ছাল সিদ্ধ করে সেবন করলে ব্যথা কমে যায়।

৭। এসিডিটি হলে ছাতিমের ছাল বা ফুল চূর্ণ করে সেবন করলে উপকার পাওয়া যায়।