কালকাসুন্দা (Sennaoccidentalis) এটি একটি বর্ষজীবী গাছ। এর বৈজ্ঞানিক নাম Cassia sophera। এর সংস্কৃত নাম কাশমার। আর বাংলা নাম কালকাসুন্দা, কালকাসুন্দি, কালকেসেন্দা। এই গাছ Senna গণের অন্তর্গত উদ্ভিদ বিশেষ। আগে এই গাছ Cassia গণের অন্তর্গত ছিল। এর পএ বৃন্তে চার থেকে ছয় জোড়া পাতা হয়। পাতা হাতে নিলে একধরনের গন্ধ পাওয়া যায়। এদের ফুল হলুদ আর ফল চ্যাপ্টা হয়। এই গাছের ফল লম্বাটে শুঁটি।গাছ ৭ ফুট পর্যন্ত লম্বা হতে পারে।কাণ্ডের রং গাঢ় সবুজ। বেশ শক্ত। গাছের কাণ্ডের বেড় ৫ ইঞ্চি পর্যন্ত হতে পারে। কাণ্ডের নিচের দিক থেকেই অসংখ্য ডালপালা বের হয়। তাই অল্প দিনের ভেতরেই একটা গাছই একটা ছোটখাট ঝোপে পরিণত হয়। এর পাতা যৌগিক। একটা বোটায় ৫-১০ জোড়া পাতা থাকে। বোটার দৈর্ঘ্য ১০-১২ ইঞ্চি। প্রতিটা পাতার দৈর্ঘ্য ১.৫-২ ইঞ্চি।
সাধারণ বর্ষা থেকে শরৎকালের মধ্যে এই গাছ জন্মায়। আর শীতের শেষ পর্যন্ত বাড়তে থাকে। বাংলাদেশ ও হিমালয় থেকে সিংহল পর্যন্ত এবং ভারতের পশ্চিমাঞ্চল থেকে মায়ানমার পর্যন্ত এই গাছ প্রচুর দেখা যায়। প্রাচীনকাল থেকে এই গাছের ডালপাল ও পাতা নানা রকম ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। তাই এই গাছের পাতা ও মূল ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
কালকাসুন্দার উপকারিতা :
১। কালকাসুন্দার পাতা সেদ্ধ করে সেই পানি পান করলে হিক্কাযুক্ত শ্বাস এবং স্বরভঙ্গের উপকার পাওয়া যায়।
২। কালকাসুন্দার পাতা সেদ্ধ করে ঘিয়ে ভেজে শাকের মত রান্না করে খেলে অরুচিতে রুচি আনে।
৩। তারকা রোগ হলে কালকাসুন্দার পাতা বেটে দুধের সাথে খেলে উপকার পাওয়া যায়।
৪। কালকাসুন্দার বীজ চূর্ণ করে শিশুদের খাওয়ালে দাস্ত বন্ধ হয়ে যায়।
৫। বিছা কামড়ালে কালকাসুন্দার পাতা নল বানিয়ে ফু দিলে বিছার কামড়ের যন্ত্রণা দূর হয়।
৬। কালকাসুন্দার পাতা গাওয়া ঘিয়ের সঙ্গে বেটে নিয়ে তার ওপর প্রলেপ দিলে গোদ রোগ ভালো হয়।
৭। কালকাসুন্দার পাতা বেটে ফোঁড়ায় ও দা দে প্রলেপ দিলে ফোঁড়ার যন্ত্রণা কমে ও দাদ ভালো হয়ে যায়।
৮। কালকাসুন্দের ফুলচূর্ণ করে প্রতিদিন সকালে ও বিকেলে পানিসহ খেলে অম্বলজনিত গলা ও বুক জ্বালা রোগ সেরে যায়।
৯। যদি হঠাৎ কেউ অজ্ঞান হয়ে যায় তাহলে কালকাসুন্দের পাতার রস এক চামচ খাইয়ে দিতে হয় এবং সেই সঙ্গে দু-ফোঁটা রস নাকে ঢেলে দিলে উপকার পাওয়া যায়।
১০। কালকাসুন্দের শিকড়ের ছাল বেটে পানি দিয়ে খেলে হাঁপানি রোগ ভালো হয়।