বকফুল | 20fours
logo
আপডেট : ২ ডিসেম্বর, ২০১৮ ১৬:০৫
বকফুল
বকফুল
Desk

বকফুল

বকফুল( Fabaceae) একটি অগস্ত্য পুষ্প। এর বৈজ্ঞানিক নাম Sesbania grandiflora। এটি পরিবার Fabaceae  এবং উপ-পরিবার Faboideae।

ফুলের আকার-আকৃতি এবং গাছের ডালে বোঁটার মাথায় বকের ঠোঁটের মতো ঝুলে থাকায় নাম হয়েছে বকফুল। বকফুলের আদি আবাস মালয়েশিয়া। ছোট আকৃতির পত্রমোচী গাছ। ডালপালা নরম, যৌগিক পত্র বিশিষ্ট। মূল কাণ্ড ধীরে ধীরে মাঝারি শক্ত মানের হয়। গাছ দ্রুত সোজা উপরে বাড়তে থাকে, তবে নির্দিষ্ট উচ্চতা রেখে মাথা কেটে দিলে ডালপালা ছড়ায়। ফলে গাছ ঝোপালো হয়, ফুল সংগ্রহ করতে সহজ হয় এবং অধিক ফুল পাওয়া যায়।তিন রঙের ফুল হয়- সাদা, লাল ও গোলাপি। বাংলাদেশে সাদা ও লাল রঙের ফুল বেশি দেখা যায়। ভাদ্র মাসের শেষের দিকে এই ফুল প্রচুর ফুটতে শুরু করে।  ফল লম্বা, প্রায় গোল। বীজ থেকে বংশবিস্তার। ৩০ থেকে ৪৫ দিনের চারা রোপণ করতে হয়। ছোট চারা গাছ দেখতে ধৈঞ্চা গাছের চারার মতো। রোপণের সর্বোচ্চ এক বছরের মধ্যে গাছে ফুল ফোটে। এটি ষড়দল ও তিক্তরস সম্পন্ন। বাংলাদেশ সহ লাওস, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া, চীন,ফিলিপিন, ভারত,অস্ট্রেলিয়া, কিউবা, মেক্সিকো। এই দেশগুলোতে বকফুল গাছ জন্মে। বকফুলের সবকিছুই ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।


পুষ্টিগুণ :

বকফুলে রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণ । কারন এতে আছে ফাইবার১.৯%, ফ্যাট ১.৩%,ক্যালোরি ৯০%,পানি ৭৪.৫%, প্রোটিন ৭.৫%, ক্যালসিয়াম ১২০ মিলিগ্রাম, ফসফরাস ৮০ মিলিগ্রাম, আয়রন ৩.৫ মিলিগ্রাম, ভিটামিন ‘সি’ ১৬৫ মিলিগ্রাম, মিনারেল ৩.৪%।


রাসায়নিক উপাদান :

বকফুলের গাছে প্রচুর রাসায়নিক উপাদান রয়েছে। বকফুল গাছের বাকল ট্যানিন ও লাল আঠা বা গাম সমৃদ্ধ। বীজে আছে স্যাপোনিন ও সেসবানিমাইড। সেসবানিমাইড ক্যানসার প্রতিরোধক হিসেবে বিবেচিত। ফুলে আছে প্রোটিন, ট্যানিন, ওলিওনোলিক এসিড,কেমফেরল, সিস্টিন, আইনোলিউসিন, অ্যাসপ্যারাজিন,ফিনাইলএলানিন, ভ্যালিন, নিকোটিনিক এসিড ও ভিটামিন সি। লাল রঙের ফুল আয়রন ও ভিটামিন বি সমৃদ্ধ। পশুখাদ্য হিসেবে বকফুলের পাতা প্রচুর প্রোটিনসমৃদ্ধ। এর পাতায় প্রায় ২৫% ক্রুড প্রোটিন আছে।

উপকারিতা :

১। হঠাৎ নাক দিয়ে পানি পড়লে বকফুলের পাতার রস গরম করে খেয়ে নিন। সেই সাথে ২-১ ফোঁটা নাকে দিয়ে টানুন উপকার পাবেন।

 ২।  বকফুলের পাতার রস খেলে কৃমি ও জ্বর ভালো হয়।

৩। বাতের ব্যথায় বাকফুলের শিকড় চূর্ণ পানির সাথে গুলে ব্যাথা জায়গায় ঘষলে,লাগালে বা প্রলেপ দিলে উপকার পাওয়া যায়।

৪। গাছের বাকল মুখের আলসার সারাতে ব্যবহার করা হয়।

৫। শরীরের বাড়তি তাপ বকফুল পাতার রস গ্রহণ করলে উপকার পাওয়া যায়।

৬। বকফুলের পাতার রস খেলে গ্যাস্ট্রিক আলসার ও বুক জ্বালা নিরাময় করে।

৭। বকফুলের পাতার রস খেলে বদ হজম রোধে ও হজম পক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে সাহায্য করে ।

৮। জ্বর, ফোলা ও ব্যাথাবেদনা সারাতে এ গাছের মূল ব্যবহার করা হয়।