চেরি একপ্রকার ফল। এর বৈজ্ঞানিক নাম Prunus cerasus। চেরি হল "প্রুনাস" গণের অন্তর্ভুক্ত। গাছ প্রজাতিভেদে গুল্ম থেকে শুরু করে আট মিটার পর্যন্ত উঁচু হতে পারে। কোনো কোনো জাতের গাছ পাতা ও ডালপালায় বেশ ঝোপালো ধরনের। পাতা ৮ থেকে ১২ সেন্টিমিটার লম্বা, আগা আয়তাকার বা তীক্ষ। ফল দুই সেন্টিমিটার, সাধারণত লালচে বা কালো। দেখতে সুন্দর ফল চেরি। কালচে লাল রঙের এই চেরি খেতেও চমৎকার। চেরির অনেক জাত "কেরাসাস(Cerasus)" উপপ্রজাতির অন্তর্ভুক্ত ৷ এই উপপ্রজাতি উত্তর গোলার্ধের দেশগুলোতে অভিযোজিত ৷ তাছাড়াও দুটি প্রজাতি আমেরিকাতে, তিনটি প্রজাতি ইউরোপের দেশগুলোতে এবং বাকিগুলো এশিয়ার জন্য অভিযোজিত ৷ চেরি অপর একটি উপপ্রজাতি হল প্যডাস(Padus) ৷ prunus avium প্রজাতির চেরি মিষ্টি চেরি বা (বুনো চেরি) নামে পরিচিত যা মানুষ খেয়ে থাকে ৷ আবার Prunus cerasus প্রজাতির চেরি টক চেরি নামে পরিচিত ৷ চেরি বাংলাদেশ সহ সর্বত্র জন্মায়।
পুষ্টিগুণঃ
চেরি খাওয়া খুবই উপকারী। কারন প্রতি ১০০ গ্রাম চেরিতে আছে ৬৩ গ্রাম ক্যালরি, কার্বোহাইড্রেট ১৬ গ্রাম, প্রোটিন ১ গ্রাম, ফোলেট ৪ গ্রাম, ভিটামিন সি ৭ মিলিগ্রাম, ভিটামিন এ ৬৪০ আইইউ, ভিটামিন কে ২ গ্রাম, পটাশিয়াম ২২২ মিলিগ্রাম, ক্যালসিয়াম ১৩ মিলিগ্রাম, ম্যাগনেসিয়াম ১১ মিলিগ্রাম, ফসফরাস ২১ মিলিগ্রাম।
উপকারিতাঃ
১। চেরিতে থাকা পটাশিয়াম উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে।
২। দেহে থাকা ক্ষতিকর কোলেস্টেরল কমিয়ে হৃদরোগ কমাতেও চেরি সাহায্য করে।
৩। চেরিতে থাকা শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্যানসার প্রতিরোধে দারুণ কার্যকর।
৪। বাতের ব্যথা, মাথা ব্যথা ও মাইগ্রেনের ব্যথা কমাতে এই ফল সাহায্য করে।
৫। চেরি ফল নিয়মিত খেলে রক্তের ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা কমে।
৬। নিয়মিত চেরি খেলে ডায়বেটিক হওয়ার আশঙ্কা কম থাকে।
৭। চেরিতে থাকা মিলাটোনিন নামক উপাদান দেহের রক্ত চলাচলে সহায়তা করে।
৮। যাদের ঘুমের সমস্যা আছে তারা চেরি খেতে পারেন। কারন চেরি খেলে ঘুম ভালো হয়। ঘুমাতে যাওয়ার আধ ঘণ্টা আগে চেরির জুস খেয়ে ঘুমালে ভালো ফল পাওয়া যাবে।
৯। পেটের চর্বি কমায়। নিয়মিত চেরি খেলে পেটে চর্বি জমে না। ওজন কমাতে চাইলে খেতে পারেন।
১০। যারা স্মৃতি-দুর্বলতায় ভুগছেন, তাঁদের জন্য চেরি উপকারী। এটি আলঝেইমারের প্রকোপ কমায় এবং। স্মৃতিশক্তি বাড়াতে কাজ করে।
১১। হৃৎস্বাস্থ্য সুরক্ষায় চেরি খুব কার্যকর। এটি কোলেস্টেরলের মাত্রা সহনীয় রাখে। হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমায়।
১২। চেরির উপাদানগুলো কোষের ক্ষয় রোধ করে। সেই সঙ্গে ত্বকে বলিরেখা পড়তে দেয় না। তাই নিয়মিত চেরি খেলে বুড়িয়ে যাওয়ার প্রবণতা কমে।
১৩। হাড়ে ব্যথা কিংবা হাড়ের সংযোগস্থলে ব্যথা কিংবা এসব স্থান ফুলে গেলে খেতে পারেন চেরি। দ্রুত আরোগ্য হবে।