চুই ঝাল | 20fours
logo
আপডেট : ৩ ডিসেম্বর, ২০১৮ ১২:৫৫
চুই ঝাল
চুই ঝাল
Desk

চুই ঝাল

চুই ঝাল একটি লতানো উদ্ভিদ। এর বৈজ্ঞানিক নাম Piper chaba। এটি Piperaceae পরিবারের অন্তভূক্ত। চুই ঝাল গাছ দেখতে পানের লতার মতো। পাতা কিছুটা লম্বা ও পুরু। পাতায় ঝাল নেই। লতা সুযোগ পেলে ৪০ থেকে ৫০ ফুট পর্যন্ত বাড়ে। পাতা ২ থেকে ৩ ইঞ্চি লম্বা হয়। হার্টের মতো আকার। আর পিপুলের পাতার লতার সাথেও বেশ সামঞ্জস্য পাওয়া যায়। নতুন অনেকেই চুইপাতা গোলমরিচ পাতার সাথে বা পানপাতার সাথে মিলিয়ে ফেলেন। কেননা দেখতে তাদেরই মতো। পুরুষ স্ত্রী ফুল আলাদা লতায় জন্মে। পরাগায়ন প্রাকৃতিকভাবেই সম্পন্ন হয়। ফুল লাল লম্বাটে দূর থেকে দেখতে অনেকটা মরিচের মতো। কাছে গেলে ফলের প্রাকৃতিক নান্দনিক কারুকার্য ধরা পড়ে। ফলের ব্যাস ১ ইঞ্চির মতো। ফল সাধারণত লাল রঙের হয়। তবে পরিপক্ব হলে বাদামি বা কলো রঙের হয়ে যায়। বর্ষায় ফুল আসে, শীতের শুরুতে ফল আসে। চুই লতা জাতীয় অর্থকরী ফসল। এর কাণ্ড ধূসর এবং পাতা পান পাতার মতো সবুজ রঙের। এর কাণ্ড, শিকড়, শাখা, প্রশাখা সবই মসলা হিসেবে ব্যবহৃত হয়। চুই সাধারণত দুই প্রকার। একটির কাণ্ড আকারে বেশ মোটা ২০ থেকে ২৫ সেন্টিমিটার, অন্যটির কা- চিকন, আকারে ২.৫ থেকে ৫ সেন্টিমিটার। চুই গাছ ১০ থেকে ১৫ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। উঁচু জায়গায় চুইঝালগাছ ভালো হয়। গোড়ায় পানি জমলে গাছ পচে যায়। গাছে ফুল-ফল হয়। বীজ থেকে চারাও হয়। তবে শিকড়সহ গিঁট কেটে লাগালে সহজে চারা হয়। গাছটির কাণ্ড বা লতা মসলা হিসেবে ব্যবহার হয়। রান্নায় এর ঝাল খাবারের স্বাদ বাড়ায় আবার শরীরেরও কোনো ক্ষতি করে না। ঝোল জাতীয় মাছ-মাংস সব কিছুতেই স্বাদ তৈরি করে। চুই ঝাল গাছ দীর্ঘদিন পর্যন্ত বেঁচে থাকে। এই গাছ বাংলাদেশ সহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া,ভারত, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, সিংগাপুর ও শ্রীলংকায় এই গাছ জন্মে। এই গাছের কাণ্ড, শিকড়, পাতা, ফুল ও  ফল ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

রাসায়নিক উপাদানঃ

চুইঝালে রয়েছে দশমিক ৭ শতাংশ সুগন্ধি তেল, ৫ শতাংশ অ্যালকালয়েড ও পিপালারটিন আছে ৫ শতাংশ ও ৪ থেকে ৫ শতাংশ পোপিরন থাকে। এছাড়া পোলার্টিন, গ্লাইকোসাইডস, মিউসিলেজ, গ্লুকোজ, ফ্রুক্টোজ, সিজামিন, পিপলাসটেরল থাকে। শিকড়ে থাকে দশমিক ১৩ থেকে দশমিক ১৫ শতাংশ পিপারিন। এই গাছের সবকিছুই আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী।

উপকারিতাঃ

১। চুই ঝাল খেলে গ্যাস্ট্রিক সমস্যা ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়।

২। চুই ঝালের শিকড় সিদ্ধ করে সেই পানি সেবন করলে পাকস্থলী সুস্থ থাকে।

৩। চুই ঝাল এর পাতা থেঁতো করে খেলে খাবারে রুচি বাড়ে।

৪। চুই ঝালের ফল খেলে মানসিক অস্থিরতা কমে।

৫। চুই ঝালের শিকড় সিদ্ধ করে নিয়মিত সেবন করলে অনিদ্রা কেটে যায়। এবং শারীরিক দুর্বলতা কেটে যায়।

৬। চুই লতার সাথে আদা পিষে খেলে সর্দি সমস্যা ভালো হয়।

৭।  চুই ঝাল খেলে কাশি, কফ, হাঁপানি, শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়া ও রক্তস্বল্পতা দূর হয়।