ধুতরা (Datura) গাছ আমাদের দেশে সবার কাছেই কম-বেশি পরিচিত। এর বৈজ্ঞানিক নাম Dutura metel, Solanaceae পরিবারের Datura গণের এক প্রকারের বিষাক্ত উদ্ভিদ। দেশের প্রায় সব জায়গাতেই অযত্ন অবহেলায় এ গাছ জন্মাতে দেখা যায়। এমনকি ২ হাজার ৫০০ মিটার উচ্চতায়ও ধুতরা গাছ জন্মে।ধুতরা উচ্চতায় প্রায় ১ মিটারের মতো, পাতা বড়, ত্রিকোণাকৃতির, রং সবুজ, শিরা ও মধ্যশিরা স্পষ্ট। ধুতরা গাছের দুটি প্রজাতি আমাদের দেশে চোখে পড়ে। সাদা ও কালো রঙের ধুতরা। সাদা রঙের ধুতরার বোঁটা, পাতা ও গাছ হালকা সবুজ রঙের এবং কালো রঙের ধুতরা গাছের পাতার বোঁটা ও গাছ বেগুনি মিশ্র রঙের। এর ফলগুলি গোলাকার। এবং গায়ে কাঁটা থাকে। বর্ষাকালে ধুতরা গাছে ফুল ফোটা শুরু হলেও হেমন্তকালজুড়ে গাছে ফুল দেখা যায়।পড়ন্ত বিকাল থেকে সন্ধ্যায় গাছে ফুল ফোটে। দিনে রোদের আলোয় ফুল সংকুচিত হয়ে যায়, সন্ধ্যায় আবার পাপড়ি মেলে। এভাবে ফুটন্ত ফুল ২ থেকে ৩ দিন তাজা থেকে ঝরে যায়। ধুতরা স্ব-পরাগায়িত ফুল, ফুলের ভেতর পুংদণ্ড ও গর্ভমুণ্ড অবস্থিত। ধুতরা গাছ বাংলাদেশ সহ ভারতের সব জায়গায় এই গাছ দেখা যায়। ধুতরা গাছের পাতা, ফুল, ফল, বীজ ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
রাসায়নিক উপাদান :
এ গাছের পাতায় যে ভেষজ উপাদান পাওয়া যায় তা হলো হ্যায়োস্যামাইন, বেলডোনা ও হেনবেন। ব্রংকাইটিস, হাঁপানি রোগের ওষুধ, অনিদ্রা ও মুখের লালাক্ষরণ দূর করে, শরীরের ব্যথা সারাতেও ব্যবহৃত হয় ধুতরা। আয়ুর্বেদিক, ইউনানী ও হেকিমি শাস্ত্রবিদরা যুগ যুগ ধরে বিভিন্ন রোগের চিকিৎসায় ধুতরার বিভিন্ন অংশ ব্যবহার করে আসছেন। ধুতরার কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই।
উপকারিতা :
১। ধুতরার ডাল ও পাতা শুকিয়ে চূর্ণ করে খেলে শ্বাসকষ্টে উপকার হয়।
২। বাতের ব্যথা কমাতে এর পাতার রস সরিষার তেলের সাথে ব্যবহার করলে ব্যথা কমে যায়।
৩। ফোলা ও ব্যথায় ধুতরা উপকারী।
৪। ধুতরা পাতার রস ৪-৫ ফোঁটা ঘোলের সঙ্গে মিশিয়ে খেলে অজীর্ণ রোগ ভালো হয়।
৫। ধুতরা পাতার রস হলুদ ও চুনের সঙ্গে মিশিয়ে স্তনে প্রলেপ স্তনের বেদনায় ভালো ফল পাওয়া যায়।
৬। ধুতরা পাতার রসের সঙ্গে ঘি মিশিয়ে ফোঁড়ায় প্রলেপ দিলে ফোঁড়া পাকে এবং বেদনা কমে।
৭। জ্বর, কাশি,সর্দি, কফ হলে ধুতরা গাছের পাতা বেটে পানি দিয়ে সেদ্ধ করে সেই পানি তেলের সাথে মালিশ করলে উপকার পাওয়া যায়।