তিসি(Linseed) এটি একটি গুল্মজাতীয় উদ্ভিদ। এর বৈজ্ঞানিক নাম linum usitatissimum। তিসি তেল ও আঁশ উৎপাদনকারী গুল্ম। তিসি গাছ ৩০ থেকে ৮০ সেমি উঁচু হয়; এর মূল কান্ড স্পষ্ট এবং শিকড় খাড়া। প্রতি ফুলে নীল, সাদা অথবা হালকা গোলাপি রঙের পাঁচটি পাপড়ি থাকে, পরাগধানী থাকে দশটি যা নীল অথবা হলুদ। ভোর বেলায় ফুল ফোটে এবং বিকেলে পাপড়ি ঝরে যায়। চকচকে, উজ্জ্বল চ্যাপটা বীজ বাদামি অথবা হলুদ রঙের, প্রায় এক সেমি লম্বা। কান্ডের বাকল বা ছাল থেকে অাঁশ তৈরি করা হয়।তিসি ফাল্গুন-চৈত্র মাসে পাকে। পাকলে গাছ এবং ফল সোনালী বা কিছুটা তামাটে রং ধারণ করে।কান্ডের বাকল বা ছাল থেকে আঁশ তৈরি হয়। আশ সংগ্রহের জন্য উদ্ভিদের কান্ড পানির নিচে ৭-২১ দিন রেখে আঁশ সংগ্রহ করা হয়। জাগ দেওয়া ও আঁশ সংগ্রহ, পাট হতে আঁশ সংগ্রহের মতো। বাংলাদেশ ও ভারতে এর চাষ করা হয়ে থাকে।
রাসায়নিক উপাদান :
তিসি হচ্ছে আঁশসমৃদ্ধ, প্রোটিন, ক্যলসিয়াম,এন্টি অক্সিডেন্টস, ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড এবং মিনারেলের একটি অসাধারণ সমন্বয়। এতে ভিটামিন বি কপ্লেক্স, ম্যাঙ্গানিজ ও ম্যাগনেসিয়াম প্রচুর পরিমাণে থাকে। তিসি আমাদের শরীরে এন্টি অক্সিডেন্টের কাজ করে দেহকে শক্তিশালী রাখে।
পুষ্টিগুণ :
তিসি পুষ্টিগুনে ভরা। কারন ১০০ গ্রাম তিসিতে আছে ৫৩৪ কিলোক্যালরি,১৮.২৯ গ্রাম আমিষ, ২৭.৩ গ্রাম স্নেহ, ২৮.৮৮ গ্রাম শর্করা,১.৬৪ মিলিগ্রাম থায়ামিন, ০.১৬১ মিলিগ্রাম রাইবোফ্লাভিন,৩৯২ মিলিগ্রাম ম্যাগনেসিয়াম, ৬৪২ মিলিগ্রাম ফসফরাস,৮১৩ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম, ৪.৩৪ মিলিগ্রাম জিঙ্ক, ০.১৭৪ মিলিগ্রাম ম্যাংগানিজ, ৮গ্রাম খাদ্য আঁশ ও ৬ মাইক্রোগ্রাম ফলেট।
উপকারিতা :
১। তিসি শরীরের দূষিত পদার্থ বের করেখাদ্য হজম করতে সাহায্য করে।
২। তিসি খেলে অতিরিক্ত ওজন কমে যায়।
৩। তিসিতে থাকা এন্টি অক্সিডেন্ট ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
৪। তিসি সারারাত পানিতে ভিজিয়ে রেখে সেই পানি সেবন করলে গ্যাস্ট্রিক ও আলসার ভালো হয়।
৫। প্রতিদিন তিসি সেবন করলে ডায়াবেটিস ভালো হয়।
৬। তিসি খেলে আমাদের হৃদপিণ্ডকে ভালো থাকে।
৭। তিসি বেটে মাথায় মাখলে খুশকি ভালো হয়। এবং মাথার ত্বকের ময়েশ্চারাইজার ঠিক রাখে।
৮। তিসি খেলে আমাদের হতাশা ও দুশ্চিন্তা দূর হয়।
এছাড়াও তিসি বেটে মধু দিয়ে প্যাক তৈরি করে লাগালে মুখের বলিরেখা প্রতিরোধ করে এবং ত্বককে মসৃণ রাখে, ত্বক উজ্জ্বল রাখে।