আঙ্গুর (Grape) এটি এক প্রকারের ফল যা লতা জাতীয় দ্রাক্ষালতা গাছে ফলে থাকে। এর বৈজ্ঞানিক নাম Vitis vinifera। দ্রাক্ষালতা গাছটি Vitaceae পরিবারের অন্তর্গত। ৬ হতে ৩০০টি পর্যন্ত আঙুর এক সাথে একই থোকায় ধরে থাকে। এর রঙ কালো, নীল, সোনালী, সবুজ, বেগুনি-লাল, বা সাদা হতে পারে। পাকা আঙুর সরাসরি খাওয়া হয়, বা এটি দিয়ে রস, জেলি, আঙুর-বীজের তেল তৈরি করা হয়। আঙুরকে শুকিয়ে কিসমিস তৈরি করা হয়। বন্য আঙুরলতা অনেক ক্ষেত্রে পরগাছা হিসাবে অন্য গাছকে গ্রাস করে ফেলে। আঙ্গুর চাষের জন্য বাড়তি জায়গার প্রয়োজন হয় না। বসতবাড়ীর আঙ্গিনায় যে স্থানে সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত রৌদ্র থাকে অথচ পানি দাঁড়ায় না এমন জায়গা নির্বাচন করে আঙ্গুর চাষ করা যায়। যদি বাড়ির আশেপাশে বা আঙ্গিনায় জায়গা না থাকে বিশেষ করে শহর অঞ্চলে তারা বাড়ির ছাদে টবে আঙ্গুর চাষ করতে পারেন। আঙ্গুরের বিভিন্ন ধরনের প্রচুর জাত রয়েছে। এসব জাতের মধ্যে উন্নতমানের হলো- থম্পসন , পুসা, বিউটি , পারলেট, আনার-ই-শাহী, চিমা সাহেবি, কালি সাহেবি (কালো), ভোকাবি, খলিলি, আর্লি মাস্কাট, হোয়াইট মালাগা ইত্যাদি। বাংলাদেশের আবহাওয়ার উপযোগী জাতের নাম ‘পার্পেল´। এ জাতটি এদেশে কিছু কিছু চাষ হচ্ছে। আঙ্গুর চারা লাগানোর উপযুক্ত সময় মার্চ-এপ্রিল মাস। আঙ্গুর চাষের জন্য মাটি হতে হবে, দো-আঁশযুক্ত লালমাটি, জৈবিক সার সমৃদ্ধ কাঁকর জাতীয় মাটি। ভারতের দক্ষিনাঞ্চলের উঞ্চ আবহাওয়ায় আঙ্গুরের চাষ হলেও এতদিন বাংলাদেশে এখনও আঙ্গুর চাষে সফল হতে পারেনি। আঙ্গুর সাধারণত বিভিন্ন প্রকারের মাটি ও আবহাওয়া জন্মাতে পারে।আঙ্গুর বিভিন্ন রোগের ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
পুষ্টিগুণ:
আঙ্গুরে প্রচুর পুষ্টি উপাদান আছে। এতে প্রোটিন, শর্করা, চর্বি, ক্যালসিয়াম, ফরফরাস, লৌহ, খনিজ, পটাশিয়াম, থিয়ামিন, রিবোফ্লাবিন, ভিটামিন-এ, বি, সি উপাদান রয়েছে৷ তাছাড়া প্রতি কেজি আঙ্গুর থেকে প্রায় ৪৫০ ক্যালরি খাদ্যশক্তি পাওয়া যায়৷ আঙ্গুর শুকিয়ে সাধারণত তৈরি হয় কিশমিশ এবং কিশমিশে রয়েছে ৬০ শতাংশ ফ্রুকটোজ।
উপকারিতা:
১। নিয়মিত আঙ্গুর জুস করে খেলে ক্যান্সার নিরাময় হয়ে থাকে।
২। আঙ্গুরের মধ্যে থাকা ফাইটো কেমিক্যাল ও ফাইটো নিউট্রিয়েন্ট আমাদের ত্বকের সুরক্ষিত রাখে।
৩। নিয়মিত আঙ্গুর খেলে শরীরে বয়সের ছাপ পড়া প্রতিরোধ হয়।
৪। নিয়মিত আঙ্গুর খেলে কিডনি ভাল থাকে।
৫। আঙ্গুরের উপাদানগুলো স্তন ক্যান্সার সৃষ্টিকারী কোষের বিরুদ্ধে কাজ করতে পুরোপুরি সক্ষম।
৬। আঙ্গুরের রস চুলে মাখলে চুল ভালো হয় এবং চুলের খুশকি দূর হয়।
৭। আঙ্গুর কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে।
৮। মাথাব্যথা আঙ্গুর খেলে আরাম উপকার পাওয়া যায় ।
৯। আঙ্গুর আমাদের শরীরের হাড়ের গঠন ও হাড় শক্ত করতে সাহায্য করে।
১০। আঙ্গুর নিয়মিত খেলে অ্যাজমা প্রতিরোধ ভালো হয়।
১১। বদহজম হলে আঙ্গুরের রস খেয়েই দেখুন না উপকার পাবেন।
১২। আঙ্গুর খেলে চোখের সমস্যা ভালো হয়।