
ফণীমনসা (Prickly pear) বহুবর্ষজীবী কাঁটাময় ক্যাকটাস। এর বৈজ্ঞানিক নাম Opuntia dillenii। এই গাছ ১ থেকে ৩ মিটার লম্বা হয়। কাণ্ড নেই অথবা থাকলেও খুবই খাটো। চ্যাপ্টা আকৃতির পাতার মতো রসাল অঙ্গ থাকে। কাঁটাওয়ালা এ চ্যাপ্টা অংশকে বলা হয় এরিওল। প্রতি এরিওলে অনেকগুলো কাঁটা গুচ্ছময়ভাবে সন্নিবেশিত থাকে। কাঁটার রং হলুদ। প্রতি এরিওলে খুদে পাতা (৪ থেকে ৬ মিলিমিটার) থাকে, যা কিছুদিনের মধ্যেই ঝরে যায়। গ্রীষ্মে এরিওল অংশে ছোট ছোট ফুলের কুঁড়ি আসে। কুঁড়ি পূর্ণতা পেলে তাতে উজ্জ্বল হলুদ রঙের মাঝারি আকৃতির ফুল ধরে। ফুলের দৈর্ঘ্য প্রায় ৮ সেন্টিমিটার। প্রতিটি ফুলে অসংখ্য পুংকেশর থাকে। ফল পাকলে বেগুনি বর্ণের হয়। ফল বহুবীজী। শোভাবর্ধনকারী উদ্ভিদ হিসেবেও লাগানো হয়। এটি সমুদ্রের কাছাকাছি এলাকার গ্রামীণ ঝোপ, পর্বতের খাঁজে ও বালুময় মাটিতে ভালো জন্মে। বহুবর্ষজীবী এ ক্যাকটাস শুষ্ক আবহাওয়া পছন্দ করে। কেন্ডি, জেলি এ অ্যালকোহল তৈরিতে এ ক্যাকটাস ব্যবহার করা হয়। ফল ও ফুল খাবার হিসেবে ব্যবহার করে আমেরিকার আদিবাসীরা। ফুল থেকে প্রাপ্ত তেল সুগন্ধি তৈরিতে ব্যবহার করা হয়। সড়ক ও বাঁধের ঢালে ভূমিক্ষয় রোধ করতে ফণীমনসা লাগানো হয়।ফণীমনসা গাছ বাংলাদেশ সহ সর্বত্র জন্মায়। ফণীমনসা গাছ ও এর ফুল, ফল ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
উপকারিতাঃ
১। ফণীমনসা গাছের রস পোড়া ক্ষত স্থানে লাগালে ক্ষত দ্রুত ভালো হয়।
২। ফণীমনসায় উপকারী খনিজ ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান রয়েছে। যা ডায়াবেটিস ও উচ্চমাত্রার কোলেস্টেরলের বিরুদ্ধে লড়াই চালানোর জন্য এটা কার্যকর।
৩। ফণীমনসা গাছে উচ্চমাত্রার আঁশ থাকে যা রক্তের অতিরিক্ত কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখে। এ ছাড়া রক্তচাপও কমিয়ে দেয়।
৪। ফণীমনসা গাছে উচ্চমাত্রার আঁশ কার্বোহাইড্রেট থাকে, যার ফলে হজম শক্তি বৃদ্ধি পেতে সাহায্য করে।
৫। ফণীমনসা গাছের রস শরবত বানিয়ে খেলে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে।
৬। ফণীমনসায় রয়েছে ভিটামিন ‘এ’ এবং ‘সি’ যার ফলে এর রস আপনার ত্বকে ব্যবহার করলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ে ও কোষ ভালো থাকে।
৭। ফণীমনসায় ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ও সোডিয়াম আছে, যা আপনার মাংসপেশির ব্যথা, কোষের কাজকারবার ঠিকঠাক রাখে।
৮। ফণীমনসায় পানির পরিমাণ অনেকখানি, তাই এর শরবত বানিয়ে খেলে পানির অভাব দূর হয়।
৯। এক গ্লাস ফণীমনসার জুস খেলে মাথা ব্যথা ভালো হয়।