ব্রাহ্মী, ব্রাহ্মীশাক, আধাবিরানি, ধুপকামিনি ( waterhyssop) এটি একটি ছোট উদ্ভিদ। এর বৈজ্ঞানিক নাম Bacopa monnieri। এটি হচ্ছে প্লান্টাগিনাসি পরিবারের একটি উদ্ভিদ। এটি ছোট গাছ, কাণ্ড এবং পাতা রসালো হয়। এর ফুল বেগুনি সাদাটে। এটা স্মৃতিশক্তি বাড়ানোর জন্য খাওয়ানো হয়। এই গাছের ভেষজ গুনাগুণ রয়েছে। এই গাছ বাংলাদেশের সর্বত্র পাওয়া যায়।
উপকারিতাঃ
১। ব্রাহ্মী শাকে উপস্থিত শক্তিশালী অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল প্রপার্টিজ দেহে আলসার সৃষ্টিকারী এইচ.পাইলোরি ব্যাকটেরিয়াকে মেরে ফেলে। ফলে এ ধরনের পেটের রোগ মাথা চাড়া দিয়ে ওঠার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়।
২। ব্রাহ্মী শাকে উপস্থিত থাকা একাধিক উপকারি উপাদান শরীরে প্রবেশ করা মাত্র বেশ কিছু নিউরোট্রান্সমিটারের কর্মক্ষমতা বাড়তে শুরু করে। ফলে এপিলেপসির মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়।
৩। একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত ব্রাহ্মী শাক খেলে মস্তিষ্কে স্ট্রেস এবং অ্যাংজাইটির জন্ম দেওয়া কর্টিজল হরমোনের ক্ষরণ কমতে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই মানসিক চাপ যেমন কমে, তেমনি মনের হারিয়ে যাওয়া আনন্দও ফিরে আসে।
৪। এই শাকে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এই উপাদানটি শরীর থেকে নানাবিধ ক্ষতিকর উপাদানদের বার করে দিয়ে একদিকে যেমন ক্যান্সার সেলের জন্ম আটকায়, তেমনি সার্বিকভাবে শরীরের কর্মক্ষমতা বাড়াতেও বিশেষ ভূমিকা নেয়।
৫। ব্রাহ্মী শাকে উপস্থিত ব্যাকোসাইড নামক এক ধরনের বায়ো-কেমিকাল ব্রেন টিস্যুর ক্ষত সারিয়ে তাদের ক্ষমতা বৃদ্ধিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই বয়সের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ব্রেন পাওয়ার কমে যাওয়ার আশঙ্কা যেমন হ্রাস পায়, তেমনি কগনিটিভ ফাংশন কমে যাওয়ার সম্ভাবনাও কমে।
৬। অতিরিক্ত টেনশনের কারণে কি ব্লাড প্রেসার ওঠা-নামা করে ? তাহলে আজ থেকেই ব্রাহ্মী শাক খাওয়া শুরু করুন। কারণ এই শাকটি রক্তচাপকে স্বাভাবিক রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। সেই সঙ্গে ব্লাড প্রেসার হঠাত্ বেড়ে যাওয়ার কারণে যাতে কোনও ধরনের ক্ষতি না হয়, সেদিকেও খেয়াল রাখে।
৭। গবেষণায় দেখা গেছে ব্রাহ্মী শাকে উপস্থিত বেশ কিছু কার্যকরি উপাদান শরীরে প্রবেশ করা মাত্র ব্রেনের হিপোকম্পাস অংশটির ক্ষমতা এতটা বেড়ে যায় যে বুদ্ধি এবং স্মৃতিশক্তি চোখে পড়ার মতো বাড়তে শুরু করে।
৮। নিয়মিত এই শাকটি খাওয়া শুরু করলে শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন সি-এর মাত্রা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে, যা রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে জোরদার করে তুলতে সাহায্য করে। আর একবার ইমিউনিটি বেড়ে গেলে কোনও ধরনের সংক্রমণ ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না।