বেল আমাদের দেশের একটি দারুণ জনপ্রিয় একটি ফল। অন্যান্য ফলের তুলনায় এর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কোনো অংশে কম নয়। গরমের দিনে এক গ্লাস বেলের শরবত শরীর ও মনে তৃপ্তি যোগায়। বেল পেটের নানা রকম রোগ প্রতিরোধে জাদুর মতো কাজ করে, কাঁচা বেল ডায়রিয়া ও আমাশায় রোগে ধন্বন্তরী ওষুধ হিসাবে বিবেচিত। বেল কাঁচা অবস্থায় সবুজ বর্ণের থাকে, আর পেকে গেলে হলদে রঙ ধারণ করে। কচি বেল খাওয়াই উত্তম। তবে পাকা বেলও বেশ উপকারী।
প্রতি ১০০ গ্রাম বেলের শাঁসে পাওয়া যায়:
পানি ৫৪.৯৬-৬১.৫ গ্রাম
প্রোটিন ১.৮-২.৬২ গ্রাম
স্নেহ পদার্থ ০.২-০.৩৯ গ্রাম
শর্করা ২৮.১১- ৩১.৮ গ্রাম
ক্যারোটিন ৫৫ মিলি গ্রাম
থায়ামিন ০.১৩ মিলিগ্রাম
রিবোফ্লেবীন ১.১৯ মিলিগ্রাম
এসকরবিক এসিড ৮-৬০ মিলিগ্রাম
নিয়াসিন ১.১ মিলিগ্রাম
টারটারিক এসিড ২.১১ মিলিগ্রাম।
আসুন এবার তাহলে জেনে নেওয়া যাক বেলের যত অজানা উপকারীতাঃ
১। ডায়রিয়া, কলেরা ও অর্শরোগ নিরাময় করে
বেল ফলের মধ্যে ট্যানিন থাকে বলে এটি ডায়রিয়া ও কলেরা নিরাময়ে সাহায্য করে। বেল ফলের শুকনা পাউডার ক্রনিক ডায়রিয়া নিরাময়ে সাহায্য করে। কাঁচা বেলের নির্যাস অর্শ ও ভিটিলিগো রোগ নিরাময়ে কার্যকরী ভূমিকা রাখে। রক্তশূন্যতা এবং কান ও চোখের সমস্যা নিরাময়ে সাহায্য করে। প্রাচীনকালে কাঁচা বেলের পাউডার হলুদ ও ঘি এর সাথে মিশিয়ে ব্যবহার করা হত ভাংগা হাড় নিরাময়ের জন্য।
২। শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা সমাধান করতে পারে
অ্যাজমা ও ঠান্ডার মত শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা সমাধানে বেলের তেল ব্যবহার করা যায়। গোসলের পূর্বে মাথার তালুতে বেলের তেল লাগালে ঠাণ্ডা প্রতিরোধ করা যায়।
৩। কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করে
বেল পাতার নির্যাস ভেষজ গুণ সম্পন্ন তাই রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে ব্যবহার করা যায়।
৪। গ্যাস্ট্রিক আলসার কমায়
বেলের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গ্যাস্ট্রিক আলসারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে সাহায্য করে বিশেষ করে গ্যাস্ট্রোডিউডেনাল আলসার। এই ধরণের আলসার পাকস্থলীর এসিডের ভারসাম্যহীনতার জন্য হয়।
৫। হার্ট ডিজিজ নিরাময়ে সাহায্য করে
বেলের জুস ও ঘি হৃদরোগ নিরাময়ে সাহায্য করে। হার্ট স্ট্রোক ও অ্যাটাক নিরাময়ে বেল ফল ব্যবহার করা হত।
সতর্কতা : পাকা বেল নিয়মিত খাওয়া উচিৎ নয়। কারণ প্রতিদিন পাকা বেল খেলে অন্ত্রের অসাড়তা বা স্বাভাবিক স্থিতিস্থাপকতা কমে যায় এবং পেট ফাঁপার সমস্যা হতে পারে। পাকা বেল একবারে বেশি পরিমাণে খাওয়া উচিৎ নয়।