
বিছুটি (Common Nettle) একটি ভেষজ উদ্ভিদ। এর বৈজ্ঞানিক নাম Urtica dioica। এটি একটি গুল্মজাতীয় উদ্ভিদ। এর উচ্চতা ২ থেকে ৩ ফুট হয়ে থাকে। এটি একটি বর্ষজীবী উদ্ভিদ। তবুও কখনো কখনো এক বছরের বেশি বেঁচেও থাকে। গাছটি লাল রঙের হয়ে থাকে। এর পাতা কান্ড, শাখা- প্রশাখা ও পাতার শিরা উপশিরা সবই লাল রঙের হয়ে থাকে। সমগ্র উদ্ভিদটির গায়ে অতি ক্ষুদ্র রোমের মত কাঁটা থাকে যা শরীরের স্পর্শে এলে ভীষণ চুলকায়। এদের পাতা আয়তাকার, অনেকটা পান পাতার মত ৩-৫ সেমি লম্বা, খসখসে। লম্বা মঞ্জুরিতে সবুজ রঙের ফুল গুচ্ছে গুচ্ছে জন্মে। গাছটির শিকড়, রাইজোম এবং পাতার রস ঔষুধের কাজে লাগে। এই গাছ বাংলাদেশ সহ ভারত, পাকিস্তান ও আফ্রিকা মহাদেশে জন্মে।
রাসায়নিক উপাদানঃ
বিছুটি গাছে রয়েছে ট্যানিন, ফাইবার, ক্লোরোফিল রাসায়নিক উপাদান। এ ট্যানিন, ফাইবার, ক্লোরোফিল, বেরিয়াম, পটাশিয়াম এবং ক্যালসিয়াম সেইসাথে লোহা, বোরন, মলিবডিনাম, স্ট্রনটিয়াম, সেলেনিয়াম, তামা, ম্যাঙ্গানিজ বিদ্যমান।
উপকারিতাঃ
১। বিছুটি পাতার চা খেলে স্নায়ুর সমস্যা ভালো হয়।
২। বিছুটি পাতা খেলে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং টেনসন কমাতে সাহায্য করে।
৩। বিছুটি পাতা শুকিয়ে গুড়ো করে নিন| অল্প ঈষদুষ্ণ জল দিয়ে পেস্ট বানিয়ে নিন| যাঁদের অয়েলি স্কিন, সারাক্ষণ ব্রণর হামলায় জেরবার তাঁরা স্নানের আগে ব্রণর ওপরে এই পেস্ট লাগিয়ে নিন| শুকিয়ে গেলে ধুয়ে নেবেন| রোজ মাখলে ব্রণ, ফুসকুড়ির উপদ্রব তো কমবেই| ত্বকে কোনো অবাঞ্ছিত দাগ থাকবে না।
৪। বিছুটি পাতার চা রোজ সকাল আর বিকেল খেলে স্ত্রীরোগে কম ভুগবেন মেয়েরা| তাই মেনোপজের পর অনেক ডাক্তার এই পাতা দিয়ে তৈরি ক্যাপসুল বা চা নিয়মিত খাওয়ার নির্দেশ দেন|
৫। বিছুটি পাতার চা দিয়ে রোজ গার্গল করলে মুখ, গলার সংক্রমণের হাত থেকে রেহাই পাবেন।
৬। খালি পেটে নিয়মিত এই পাতার গুড়ো ঈষদুষ্ণ জলে মিশিয়ে খেলে গ্যাস, অম্বল কাছে ঘেঁষবে না।
৭। বুকে কফ জমা, কাশি, নিউমোনিয়া সহ ফুসফুসের সমস্ত রোগ শত হস্ত দুরে থাকবে বিছুটি পাতার চা খেলে।
৮। বিছুটি পাতার মধ্যে থাকা অ্যাসট্রিনজেন্ট একজিমা, পোকার কামড়, পক্স কমাতে সাহায্য করে| তাই ডাক্তার বাবুরা একজিমা বা অন্যান্য চর্মরোগ কমাতে অনেক সময় পাতার তেল ব্যবহারের পরামর্শ দেন।
৯। বাতের ব্যথায় কুপোকাত? গাঁটে, হাতে-পায়ে বিছুটি পাতার রস বা তেল ঈষদুষ্ণ অবস্থায় রোজ মালিশ করুন| ব্যথা পালাতে পথ পাবে না| একই ফল মিলবে রোজ এই পাতার চা খেলে।
১০। হাঁচি-কাশি-সর্দি ছাড়াও এলার্জি কমাতে সাহায্য করে।