শাল গাছ | 20fours
logo
আপডেট : ১৪ অক্টোবর, ২০২০ ০৯:৫৬
শাল গাছ
শাল গাছ
Desk

 শাল গাছ

শাল (Sal Tree) সরল কাণ্ডবিশিষ্ট পত্রঝরা একটি সুউচ্চ গাছ। এর বৈজ্ঞানিক নাম Shorea robusta Gaertn.। এই গাছ ২৫-৩০ মিটার উঁচু হয়। কাণ্ডে শাখা-প্রশাখা কম, ছোট গাছে বাকল মসৃণ হলেও গাছের ছাল ফাটা ফাটা, পুরু ২-৩ সে.মি.। পাতা লম্বায় ১৫-২০ সে.মি. ও চওড়ায় ১০-১৫ সে.মি., আকারে আয়তাকার, গোড়ার দিক ডিম্বাকৃতি ও আগার দিকটা ক্রমশ সরু। ফেব্রুয়ারি-মার্চে পাতা ঝরে যায়। আবার এপ্রিল মাসে গজাতে শুরু করে। তখন হলুদ আভাযুক্ত ছোট ছোট নরম ও সাদা ফুল ফোটে। তারপর ১-২ সে.মি. লম্বা ও শাখাযুক্ত ফল ধরে। এ ফল জুন মাসে পাকে।
শাল কাঠ খুব মজবুত। তাই রেলের স্লিপার, ঘরের কড়ি বরগা, নৌকার ডেক ও ঘরের খুঁটির কাজে ব্যবহারের জন্য উত্তম। এ গাছে এক প্রকার আঠা হয়, একে ধুনা বলে। ধুনা আগুনে ফেললে যে ধোঁয়া বের হয় তা জীবাণুনাশক ও সুগন্ধযুক্ত।  বাংলাদেশ শালের আদি বাসস্থান। গাজীপুর, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ ও দিনাজপুরের বনে এটি অতি পরিতি গাছ। এই গাছের ভেষজ গুণাগুণ ও রয়েছে।

উপকারিতাঃ

১। কচি শালকাঠ ২৫ গ্রাম আন্দাজ নিয়ে ভালোভাবে থেঁতো করে ৪/৫ কাপ পানিতে সেদ্ধ করে দেড় কাপ থাকতে নামিয়ে ছেঁকে ঐ নির্যাসটুকু সকাল-বিকাল সমভাগে খেতে হবে। এভাবে ১৫ দিন খেলে শরীরের মেদ কমবে।

২। কচি শালপাতা পানিসহ ছেচে এক চা চামচ রস নিয়ে তার সাথে আবার অল্প পানি মিশিয়ে হালকা গরম করে খেতে হবে, তবে অপ্রাপ্তবয়স্কের জন্য পরিমাণ অর্ধেক করে নিতে হবে। দেখবেন কৃমি সমস্যা দ্রুত সেরে যাবে।

৩। অল্প পরিশ্রমে ঘেমে যান, গরম সহ্য করতে পারেন না, আবার হাঁপানিতে ভোগেন। এরকম হলে ২০ গ্রাম আন্দাজ শালাছের ছাল থেঁতো করে ৪/৫ কাপ পানিতে সেদ্ধ করে এক কাপ থাকতে নামিয়ে, ছেঁকে ঐ নির্যাসটুকু সকাল-বিকাল সমভাগে খেতে হবে। এভাবে ১৫ দিন খেলে এসবের উপশম হবে।

৪। জননেন্দ্রিয়ের মুখে সাদা সাদা কফের মতো জমে থাকে, ভিতরটা পিচ্ছিল থাকে। এটা এক ধরনের শ্বেতপ্রদর। এক্ষেত্রে কচি শাল কাঠ (কাঁচা) ৫০ গ্রাম আন্দাজ নিয়ে ভালোভাবে থেঁতো করে ৯/১০ কাপ পানিতে সেদ্ধ করে দেড় কাপ থাকতে নামিয়ে অর্ধেক নিয়ে সকাল-বিকাল দু’বেলা খেতে হবে।  এতে কয়েকদিনের মধ্যে উপকারিতা পাবেন।

৫। শাল রেজিন বা ধুনা আমাশয় ও অজীর্ণ সারাতে ব্যবহার করা হয়। শালের শুকনা আঠা/ধুনা ব্যবহারেও আমাশয় দূর করা যায়। ধুনা মিহি গুঁড়া করে ২৫০ মি.গ্র. অল্প পানিতে মিশিয়ে দিনে ২/৩ বার খেতে হবে। তবে অপ্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে এর মাত্রা অর্ধেক।

৬। কোনো ফোঁড়ায় শালপাতা বেটে গরম করে প্রলেপ দিলে তাড়াতাড়ি ফেটে যাবে।

৭।  গায়ের দুর্গন্ধ ও চুলকানি সারাতেও নিমপাতার মতো শালপাতা ব্যবহার করা যায়। শালপাতা ১০/১২টি ২ লিটার আন্দাজ পানিতে সেদ্ধ করে অর্ধেক হলে নামিয়ে ছেঁকে ঐ পানি সমস্ত শরীরে লাগিয়ে আধা ঘন্টা পরে গোসল করে ফেললে গায়ের দুর্গন্ধ ও চুলকানি দূর হবে।