Logo
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারি, ২০২৫
পাট শাক

পাট শাক

Desk | আপডেট : ২২ জানুয়ারি, ২০১৯ ০৮:৩৯
পাট শাক

পুষ্টিগুণে ভরা পাটশাক অনেকের কাছেই প্রিয় একটি খাবার। আজকাল এটি প্রায় সারা বছরই বাজারে পাওয়া যায়। পাটশাক যেমন সহজলভ্য তেমন খেতেও অনেক সুস্বাদু। সাধারণত পাট পাতা দুই ধরনের হয়। এক জাতের পাটের পাতা সামান্য তেতো হয় আর অন্য জাতের পাতা একটু মিষ্টি বা নরমাল স্বাদের হয় থাকে।  এর মধ্যে তেতো পাট কেবল শাক খাওয়ার জন্যই চাষ করা হয় যাতে  সেলুলোজের মাত্রা কম থাকে। এজন্য এই পাতা সুস্বাদু হওয়ার পাশাপাশি হজম প্রক্রিয়ায় সহায়তা করে। আর মিষ্টি বা মুনিয়া প্রজাটির পাট  সাধারণত পাটের আঁশ এর জন্য চাষ করা হয় যাতে সেলুলোজের মাত্রা বেশি থাকায় হজমে অসুবিধা হয় আর স্বাদও তুলনামূলক ভাবে কম। শাক হিসেবে এটি শুধু মুখরোচকই নয় পাটের পাতায় রয়েছে অনেক পুষ্টি গুনাগুণ। আজ আমরা জানব পাট শাকের বিভিন্ন উপকারিতা এবং পুষ্টিগুণ সম্পর্কে।

পাট শাকের পুষ্টিগুণ:

পাট শাকে প্রচুর পরিমাণ খনিজ লবণ যেমন পটাশিয়াম,আয়রন, ক্যালশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ফসফরাস, সেলেনিয়াম এবং ভিটামিন যেমন ভিটামিন সি, ই, কে, বি- ৬ এবং নিয়াসিন রয়েছে। কারণ প্রতি ১০০ গ্রাম পাটশাকে ক্যালরির পরিমাণ ৭৩। এতে আমিষ থাকে ৩.৬ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ২৯৮ মিলিগ্রাম, লোহা ১১ মিলিগ্রাম ও ক্যারোটিন ৬৪০০ (আইইউ)। তাছাড়া পাট শাকে রয়েছে উচ্চমাত্রায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ক্যারোটিন এবং খাদ্যআঁশ। এসব পুষ্টি উপাদান আমাদেরকে রোগবালাই থেকে দূরে রাখতে সহায়তা করে।

উপকারিতা:

১। পাটশাকে বিদ্যমান পটাশিয়াম মানব শরীরের শিরা উপশিরার বিস্তৃতি বাড়িয়ে রক্তসঞ্চালন ও রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখতে ভুমিকা রাখে।

২। শরীরের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধিতে ও দেহের তাপমাত্রা স্বাভাবিক রাখতে পর্যাপ্ত পরিমাণ হিমোগ্লোবিন দরকার রয়েছে। পাটশাকে প্রচুর পরিমান আয়রন থাকায় এটি রক্তে এই প্রয়োজনীয় হিমোগ্লোবিন উৎপাদনে সহায়তা করে।

৩। পাটশাকে প্রচুর আঁশ থাকায় তা খাবার হজম প্রক্রিয়ায় সহায়তা করে। এছাড়া কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতেও পাট শাকের ভুমিকা রয়েছে।

৪। পাটশাকের তেতো স্বাদ মুখে লালা ক্ষরণ করে শ্বেতসারকে ভাঙতে এবং খাওয়ার রুচি বাড়াতে সাহায্য করে। এতে হজমের সুবিধা হয় ফলে খাবারের রুচি বাড়ে। মুখের স্বাদ ফিরিয়ে আনতে ও মেদ বৃদ্ধির আশঙ্কা কমাতে তাই পাটশাক খাওয়া যেতে পারে।  

৫। পাট শাকের ভোজ্য আঁশের সাথে যুগল বন্দি হয়ে রক্তের কোলেস্ট্রোল শরীর থেকে বেড়িয়ে যাওয়ার প্রমান মিলেছে। ফলে যারা নিয়মিত যারা পাটশাক খান তাদের হার্ট এটাক এবং ষ্ট্রোকের ঝুঁকি অনেক কমে যায়।

৬। পাট শাকে পর্যাপ্ত পরিমানে ম্যাগনেশিয়াম থাকায় তা শরীরে প্রয়োজনীয় হরমোন উৎপাদন করে যা স্নায়ুতন্ত্র শান্ত রাখতে সহায়তা করে যা আমাদের নিরবচ্ছিন্ন নিদ্রা নিশ্চিত করতে ভুমিকা রাখে।

৭। পাটশাকে  প্রচুর পরিমাণ আয়রন, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, সোডিয়াম এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদান  থাকায় এই শাক হাড় গঠন ও ক্ষয়পূরণ করে ও অষ্টিওপরোসিস রোগ নিরাময়ে সহায়তা করে।

৮। পাট শাকে ভিটামিন এ, ই এবং সি  থাকায় শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে যেমন ভিটামিন সি রক্তের শ্বেত কনিকা বৃদ্ধি, ভিটামিন এ এবং ভিটামিন ই চোখ, হৃদপিন্ড সহ অন্যান্য অঙ্গের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।

৯। পাট শাকে প্রচুর ভিটামিন ই থাকে। ভিটামিন-ই গেঁটেবাত, আর্থরাইটস এবং প্রদাহ জনিত অন্যান্য রোগ প্রতিরোধে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই এই সকল রোগের জন্য পাট শাক একটি গুরুত্বপূর্ণ পথ্য।

১০। পাট শাকে বিদ্যমান ফলিক অ্যাসিড ত্বক ও চুল ভালো রাখতে সাহায্য করে।

১১। পাটশাকে থাকা উচ্চমাত্রার অ্যান্টি অক্সিডেন্ট শরীরে যেকোনো ধরণের ক্যান্সার রোধে সহায়তা করে।

উপরে