মিষ্টি কুমড়ার স্বাস্থ্য উপকারীতা
সুস্বাদু মিষ্টি কুমড়া অনেকেরই খুব প্রিয়। এ সবজিতে ভিটামিন-এ, বি-কমপ্লেক্স, সি,ই, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন, জিংক, ফ্লেভনয়েড পলি-ফেনলিক উপাদান সমূহ ছাড়াও দেহের নানা রকমের পুষ্টির যোগান দিয়ে থাকে। আর আজকের লেখাতে থাকছে আপনাদের জন্য মিষ্টি কুমড়ার কিছু স্বাস্থ্য উপকারীতা।
আসুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক মিষ্টি কুমড়ার কিছু স্বাস্থ্য উপকারীতাঃ
১। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে মিষ্টি কুমড়া একটি অত্যন্ত উপকারী সবজি। এটি ভিটামিন এ, সি এবং ই, ক্যারটিনয়েড, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম প্রভৃতি নানা পুষ্টির একটি ভাণ্ডার। এসব উপাদান আমাদের শরীরকে যে কোন রোগের প্রতিরোধক হিসেবে তৈরি করে। তাই প্রতিদিন মিষ্টি কুমড়া খেলে শরীরে রোগ ব্যাধির সংক্রমণও কমে যায়।
২। মিষ্টি কুমড়ায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ রয়েছে; যা চোখে ছানি পড়া ও দৃষ্টিশক্তি হ্রাসের ঝুঁকি অনেকাংশে কমিয়ে দেয়। তাই খাদ্য তালিকায় নিয়মিত এ সবজি রাখার ফলে দৃষ্টিশক্তি আরও প্রখর হবে এবং চোখের ছোটখাটো কিংবা মারাত্মক কোনো সমস্যায় পড়তে হবে না।
৩। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ মিষ্টি কুমড়া ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে। এছাড়া অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কোলেস্টেরল কম রাখতে সাহায্য করে। আর্টারির দেয়ালে চর্বির স্তর জমতে বাধা দেয়। ফলে মিষ্টি কুমড়া নিয়মিত খেলে হৃদরোগও প্রতিরোধ করা যায়।
৪। মিষ্টি কুমড়াতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি; যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলে সর্দি-কাশি, ঠাণ্ডা লাগা প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। সেই সাথে মিষ্টি কুমড়ায় প্রচুর পরিমাণে আঁশ থাকায় তা সহজেই হজম হয়। হজমশক্তি বৃদ্ধি ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে মিষ্টি কুমড়ার জুড়ি নেই।
৫। কুমড়ার ক্যারটিনয়েড এর জন্য রঙ উজ্জ্বল কমলা হয়ে থাকে। এটি দেহের জ্বালাপোড়ার সমস্যা দূর করতে সহায়তা করে। এই সবজির বিটা-ক্যারোটিন উপাদান মানবদেহের কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখে। আলফা-ক্যারোটিন উপাদান দেহে টিউমার হওয়া থেকে রক্ষা করে। কুমড়ার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ভিটামিন-ই মানবদেহকে ক্যান্সার ও আলঝেইমার রোগ হওয়ার ঝুঁকি কমিয়ে দেয়।
৬। কুমড়াতে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম ও ভিটামিন-সি রয়েছে, যা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। এছাড়া কুমড়োতে বিদ্যমান আরও বিভিন্ন উপাদান দেহের কিডনি, লিভার, হার্টকে সুস্থ রাখে। কুমড়োর ফাইবার দেহে কোলেস্টেরলের মাত্রা ঠিক রেখে দেহকে স্ট্রোক করার ঝুঁকি থেকে রক্ষা করে।
৭। মিষ্টি কুমড়ার শাঁসালো অংশে এবং এর বীজ বা দানায় প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম থাকায় এটি হাড় ও দাঁতের ক্ষয়রোধ করে। নিয়মিত মিষ্টি কুমড়া খাওয়ার অভ্যাস দাঁত ও হাড়কে করবে আরও মজবুত।
এছাড়াও ত্বকের সুরক্ষায় মিষ্টি কুমড়ার ভূমিকা অসামান্য। এতে ত্বক সুরক্ষাকারী উপাদান বিটা ক্যারোটিন প্রচুর পরিমাণে রয়েছে; যা ত্বককে আরও মসৃণ ও কমনীয় করে তোলে। এছাড়া মিষ্টি কুমড়ায় ফ্যাটি অ্যাসিড থাকায় ত্বকে সহজে বলিরেখা বা ভাঁজ পড়বে না। আর ভিটামিন সি থাকায় ত্বক হয় লাবণ্যময়। এতে আলফা ক্যারোটিন জাতীয় উপাদান থাকার ফলে বার্ধক্যও আসে দেরিতে।