গাজর
গাজর (Carrot) একটি বর্যজীবী উদ্ভিদ। এর বৈজ্ঞানিক নাম Daucus carota এবং সংস্কৃত নাম গর্জর। এটি Apiaceae গোত্রের অন্তভূক্ত। বাংলাদেশের এটি একটি জনপ্রিয় শীতকালীন সবজি। এর কাণ্ড সর্বোচ্চ ৪ ফুট পর্যন্ত হয়। এর পাতার দৈর্ঘ্য ২-৩ ইঞ্চি। পাতায় রোম থাকে। এর পুষ্পদণ্ডের পত্র অনেক। এতে ৩টি আঁকড়ি থাকে। ফুলের পাপড়ি ডিম্বাকৃতির। ফুলের রঙ সাদা এবং উজ্জ্বল। ফল ১/১০ ইঞ্চি। ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় গাজর খুব ভালো জন্মে। সাধারণত নভেম্বর মাসে এর বীজ বপন করা হয়। অনেকে আগাম ফসল উৎপাদনের জন্য সেপ্টেম্বর মাসে বীজ বপন করে থেকেন। তবে সাধারণত অক্টোবরের শেষ ভাগ থেকে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে বীজ বপন করা হয়। গাজর চাষের জন্য দো-আঁশ মাটি সবচেয়ে উপযোগী। উঁচু রোদযুক্ত জমি গাজর চাষের জন্য ভালো। সবজি হিসাবে ব্যবহৃত গাজর গাছের মূলের রঙ গাঢ় কমলা। প্রজাতিভেদে এর রঙ পার্পেল, লাল, সাদা বা হলুদ হতে পারে। গাজর বলতে সাধারণভাবে এর মূলকেই শনাক্ত করা হয়। ভালো গাজর পাওয়ার জন্য প্রায় ১০০ দিন অপেক্ষা করা হয়। ভালোমানের গাজর পেতে হলে বীজ বোনার ১০০ থেকে ১২৫ দিনের মধ্যে ফসল সংগ্রহ করতে হবে। গাজর বাংলাদেশ সহ ভারত, ইউরোপ ও এশিয়ায় এর চাষ করা হয়ে থাকে। গাজর খাওয়ার পাশাপাশি ঔষধ হিসেবে ও ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
পুষ্টিগুণ:
গাজরে রয়েছে প্রচুর পুষ্টিগুণ। কারণ প্রতি ১০০ গ্রাম গাজরে আছে ক্যারোটিন ১০, ৫২০ মাইক্রোগ্রাম, শর্করা ১২.৭ গ্রাম, আমিষ ১.২ গ্রাম, জলীয় অংশ ৮৫.০ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ২৭.০ মি. গ্রাম, আয়রণ ২.২ মি গ্রাম, ভিটামিন বি১ ০০.০৪ মি. গ্রাম, ভিটামিন বি২ ০.০৫ মি. গ্রাম, চর্বি ০.২ গ্রাম, ভিটামিন সি ১৫ মি. গ্রাম, আঁশ ১.২ গ্রাম, অন্যান্য খনিজ ০.৯ গ্রাম, খাদ্যশক্তি ৫৭ ক্যালরি।
উপকারিতা:
১। গাজর মধু দিয়ে পেস্ট করে ত্বকে লাগালে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাবে।
২। নিয়মিত কাঁচা গাজর চিবিয়ে খেলে দাঁত সাদা ও চকচকে হয়ে ওঠে।
৩। গাজরের রস ব্রণে লাগালে দ্রুত ব্রেন ভালো হয়ে যায়।
৪। নিয়মিত গাজর খেলে দৃষ্টিশক্তি ভালো থাকে।
৫। গাজর ব্রেস্ট ক্যান্সার, কোলন ক্যান্সার ও ফুসফুসের ক্যান্সারের মতো ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
৬। গাজর খেলে ওজন অনেক দ্রুত কমে।
৭। গাজরে রয়েছে প্রচুর পরিমানে বেটা ক্যারোটিন যা আমাদের শরীরের ভেতরে গিয়ে এন্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। এবং আমাদের শরীরের ক্ষয়প্রাপ্ত সেলগুলোকে ঠিকঠাক করতে সাহায্য করে।
৮। গাজর বাইরে থেকেও ত্বকের অনেক উপকার করে। এটা ব্যবহার করতে পারেন ফেশিয়ালের উপাদান হিসেবে।