রেড়ি
রেড়ি একটি ছোট গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ। এর বৈজ্ঞানিক নাম Jatropha curcas। স্থানীয় নাম ভেন্না, রেড়ি। এটি Euphorbiaceae পরিবারের অন্তভূক্ত। বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে এটি ‘কচা’ বা ‘বেড়া’ গাছ নামে বহুল পরিচিত। কিছু কিছু জায়গায় ‘ভেন্না’ এবং রেড়ি নামেও পরিচিত। গাছ সাধারণত ৩ মিটার হতে ৪ মিটার পর্যন্ত উঁচু হয়ে থাকে। অত্যন্ত নরম প্রকৃতির গাছ। ডাল কাটলে অথবা পাতা ছিঁড়লে সাদা আঁঠালো রস বের হয়ে আসে। এর পাতা চওড়া , দেখতে হাতের পাঞ্জার মতো। পাতার আকার অনেকটা পেঁপে গাছের পাতার মত; আকারে ছোট। কাণ্ডের চারদিকে গোল হয়ে ছোট ছোট হলুদ ফুল হয়। পরবর্তীতে ফল হয়। ফলের গায়ে উঁচু কোমল কাঁটা থাকে। ফল পাকার পর ফেটে বীজ পড়ে যায়, বীজ কালো চকচকে। ভেরেণ্ডা ৫০বছর পর্যন্ত ফল দেয় এবং প্রতি বছর ফলন আগের বছরের চেয়ে বেশি হয়। এই গাছের ফল থেকে যে বীজ পাওয়া যায় তা থেকে বিশেষ উপায়ে তেল পাওয়া যায়। ভেরেণ্ডার তেল ডিজেলের বিকল্প (বায়োডিজেল) হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে বিশ্ব জুড়ে। বাংলাদেশেও রয়েছে এর বিশেষ কদর। এছাড়া তেল তৈরি করার সময় যে খৈল পাওয়া যায় তা জৈব সার হিসেবে ব্যবহার করা যায়। এই গাছের মাটির নিচের দিকের কান্ড এবং মূল ঔষধরূপে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
উপকারিতা :
১। চোখ উঠলে রেড়ির পাতার রস ছেঁকে নিয়ে ২ বার ফোঁটা ফোঁটা চোখে দিলে উপকার পাওয়া যায়।
২। কানের যন্ত্রণা হলে রেড়ি পাতা ও এক টুকরো আদা থেঁতো করে সরষের তেলের সাথে কানে দিলে যন্ত্রণা কমে যায়।
৩। রেড়ির পাতা ঘিয়ের সাথে ভেজে ভাতের সাথে খেলে রাতকানা রোগ ভালো হয়।
৪। মাথা ব্যথা হলে রেড়ির পাতার রস ছেঁকে নিয়ে সেবন করলে ব্যথা ভালো হয়ে যায়।
৫। রেড়ির মূলের ছাল বেটে হলুদ গুড়ো মিশিয়ে গায়ে মাখলে খোস পাঁচড়া ভালো হয়।
৬। মূল সেদ্ধ করে সেই ক্বাথ সেবন করলে আমবাত ভালো হয়।
৭। কাঁচা রেড়ির মূল সেদ্ধ করে সকাল বিকেল খেলে প্রসাব স্বাভাবিক হবে।
৮। প্রতিদিন তরকারি রান্নার সময় রেড়ি বীজের শাঁস বেটে নিয়ে তরকারির সাথে খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য ভালো হয়।
৯। যদি ছোট কৃমি হয় তাহলে রেড়ির তেল ব্যবহার করলে উপকার পাওয়া যায়।
১০। বাতের ব্যথা হলে রেড়ির তেল গরম করে তার সাথে লবন মিশিয়ে সেই স্থানে লাগালে ব্যথা ভালো হয়।