কর্পূর গাছ
কর্পূর গাছ(Camphor tree, Camphor laure) এটি একটি সপুষ্পক উদ্ভিদ। এর বৈজ্ঞানিক নাম Cinnamomum camphora। এটি Lauraceae পরিবারের একটি উদ্ভিদ। এই গাছ ২০–৩০ মি (৬৬–৯৮ ফুট) লম্বা হয়। প্রায় মাটির কাছাকাছি থেকেই ডালপালাগুলো চারপাশে সমান্তরালভাবে ছড়িয়ে পড়ে। মূলত এ বৈশিষ্ট্যের কারণেই খানিকটা দূর থেকে গাছটি শনাক্ত করা যায়। কর্পূর গাছকে স্থানবিশেষে কাপুর গাছ নামেও ডাকা হয়। ছড়ানো ডালপালার আগায় পাতাগুলো গুচ্ছবদ্ধ থাকে। পাতা আকারে ছোট, দারুচিনি বা তেজপাতার মতো। ফাল্গুন-চৈত্রে ছোট ছোট সবুজাভ ফুল ফোটে। তারপর জাম-আকৃতির ফল আসে। এ গাছ থেকে কর্পূর হয়। গাছের কাঠ থেকে পাতন-পদ্ধতিতে কর্পূর সংগ্রহ করা হয়। একটি পরিণত গাছ থেকে ৪-৫ কেজি কর্পূর পাওয়া যায়। গাছের থেকে মোমের মতো রস বেরোয় তা থেকেই কর্পূর তৈরী হয়।
এর কান্ড, পাতা, ডাল সবকিছুতেই কর্পূর আছে। এ গাছের যে কোন অংশ কেটে নিয়ে পাত্রে গরম করতে হয়। গরম বাষ্পের সংস্পর্শে এসে এর মধ্যকার কর্পূর বেরিয়ে আসে। এই কর্পূর মেশানো বাষ্প এসে কঠিন হয়ে জমে পাত্রের ঠান্ডা অংশের গায়ে। সেখান থেকে কর্পূর সংগৃহীত হয়। কর্পূর গাছ বাংলাদেশ সহ অস্ট্রেলিয়া,চীন, জাপান, কোরিয়া, তাইওয়ান, ভিয়েতনামসহ এশিয়ায় জন্মে। কর্পূর গাছ ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
উপকারিতা:
১। শরীরের ব্যথা ও ফোলা কমাতে কর্পূর ব্যবহার করা হয়।
২। চামড়ার এলার্জি বা লালচে ভাব , চুলকানি , ঘামাচি হলে কর্পূর ঘষে দিলে উপকার পাওয়া যায়।
৩। নখে ফাঙ্গাস হলে নখে কর্পুর এর সাথে নারকেল তেল মিশিয়ে লাগলে ফাঙ্গাস ভালো হয়।
৪। কর্পূর এর সাথে লোশন বানিয়ে লাগালে ব্যথা ভালো হয়।
৫। ঘুম এর সমস্যা থাকলে কর্পূর এর তেল শোবার সময় বালিশে লাগিয়ে শুলে খুব ভালো ঘুম হয়।
৬। সর্দিতে বা ঠান্ডা লাগলে বা গলায় ব্যথা হলে কর্পূর তেলের সাথে মিশিয়ে গলায়, বুকেপিঠে লাগালে খুবই উপকার হয়।
৭। চুল পড়া , খসখসে ভাব দূর করতে কর্পূরের তেলের সাথে নারকেল তেল মিশিয়ে মাথায় মাখলে নতুন চুল উঠে চুল নরম ও সুন্দর হয়।
৮। পায়ের পেশীতে টান ধরলে সরষের তেলের সাথে কর্পূর এর তেল মিশিয়ে মালিশ করলে উপকার পাওয়া যায়।