খয়ের
খয়ের( Catechu, Cachou বা Black Cutch) মাঝারি আকারের পাতাঝরা বৃক্ষ। এর বৈজ্ঞানিক নাম Acacia catechu। ১৫ থেকে ১৮ মিটার পর্যন্ত উঁচু হতে পারে, গাছ শাখাবহুল ও কাঁটাযুক্ত। পাতা যৌগিক এবং পত্রখণ্ড ক্ষুদ্র। পত্রকোণে মঞ্জরি হয়। ফল সাদাটে, শিমের মতো চ্যাপটা। চৈত্র মাসে ফুল হয়। পৌষ মাসে ফল পাকে। কাঠ কাজে লাগে। এ গাছ থেকেই খয়ের উৎপন্ন হয়। খয়ের পানের অন্যতম প্রধান মশলা হিসাবে ব্যবহার করা হয়। খয়ের গাছের নির্যাস দু প্রকার - শ্বেত খয়ের এবং বাদামি খয়ের। শ্বেত খয়েরের ব্যবহার অনেক বেশি এবং এটি পাপড়ি খয়ের নামেও পরিচিত। বাদামি খয়ের কাপড়ের রং তৈরিতে ব্যাপকভাবে ব্যবহূত হয়। পানের মসলা হিসেবে পাঁচ প্রকার খয়েরের প্রচলন রয়েছে - পাপড়ি, জনকপুরী, পেগু, তিলি ও বেলগুটি। এ প্রসঙ্গে সুগন্ধি কেয়া খয়েরের নামও উল্লেখযোগ্য।
খয়েরের গাছের কান্ড বা ডাল টুকরো টুকরো করে কেটে সেগুলি কয়েকদিন পানিতে ভিজিয়ে রাখা হয় এবং পানিতে খয়ের রস নিঃসৃত হয়। এ পানিকে জ্বাল দিয়ে ঠান্ডা করলে অশোধিত খয়ের বা পাথর খয়ের প্রস্ত্তত হয়। ভেষজ ঔষধ হিসেবে খয়ের গাছের ব্যবহার গুরুত্বপূর্ণ এবং এ গাছের পাতা, ছাল এবং নির্যাস থেকে বিভিন্ন রোগের কবিরাজী বা আয়ুর্বেদিক ঔষধ তৈরি হয়।
খয়ের গাছের বীজ থেকে চারা জন্মানো হয়ে থাকে। খয়ের গাছ বাংলাদেশ, পাকিস্তান, থাইল্যান্ড, মায়ানমার, চীন, শ্রীলঙ্কা, সিকিম এই দেশগুলোতে সিকিম গাছ জন্মে। খয়ের গাছ ভেষজ ঔষধ হিসেবে ও ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
উপকারিতা:
১। শরীরে ফোঁড়া হলে খয়ের কাঠ পানিতে সেদ্ধ করে কিছু দিন নিয়মিত খেলে উপকার পাওয়া যায়।
২। শরীরে শ্বেতি দাগ হলে পরিমাণ মতো খয়ের কাঠ সেদ্ধ করে সেই পানি দুধের সাথে মিশিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যায়।
৩। খয়ের কাঠ পানিতে সিদ্ধ করে সেই ক্বাথ খেলে জ্বর ভালো হয়ে যায়।
৪। খয়ের কাঠ পানিতে সিদ্ধ করে সেই ক্বাথ সেবন করলে মেদ কমে যায়।
৫। খয়ের চূর্ণ সাদা দইয়ের সঙ্গে মিশিয়ে খেলে কাশি ভালো হয়।
৬। খয়ের পানিতে ভিজিয়ে সেই পানি দিয়ে কুলকুচি করলে দাঁতের মাড়িফোলা ও মুখের দুর্গন্ধ ভালো হয়।
৭। খয়ের পানিতে ভিজিয়ে রেখে সেই পানি সেবন করলে রক্ত আমাশয় উপকার পাওয়া যায়।