কদম
কদম (Burflower tree, Laran) এটি বৃক্ষ জাতীয় উদ্ভিদ। এর বৈজ্ঞানিক নাম Anthocephalus indicus। এটি Rubiaceae পরিবারের অন্তভূক্ত। বাংলাদেশের সর্বত্র এই গাছ জন্মে। কদম গাছ ৪০ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। দীর্ঘাকৃতি, বহুশাখাবিশিষ্ট বিশাল বৃক্ষ বিশেষ এবং এর ফুল। কদমের কাণ্ড সরল, উন্নত, ধূসর থেকে প্রায় কালো এবং বহু ফাটলে রুক্ষ, কর্কশ। শাখা অজস্র এবং ভূমির সমান্তরালে প্রসারিত। পাতা হয় বড় বড়, ডিম্বাকৃতি, উজ্জ্বল-সবুজ, তেল-চকচকে এবং বিন্যাসে বিপ্রতীপ। উপপত্রিকা অত্যন্ত স্বল্পস্থায়ী বিধায় পরিণত পাতা অনুপপত্রিক। বোঁটা খুবই ছোট। নিবিড় পত্রবিন্যাসের জন্য কদম ছায়াঘন। শীতে কদমের পাতা ঝরে এবং বসন্তে কচি পাতা গজায়। সাধারণত পরিণত পাতা অপেক্ষা কচি অনেকটা বড়। কদমের কচি পাতার রঙ হালকা সবুজ। কদমের একটি পূর্ণ মঞ্জরিকে সাধারণত একটি ফুল বলেই মনে হয়। তাতে বলের মতো গোল, মাংসল পুষ্পাধারে অজস্র সরু সরু ফুলের বিকীর্ণ বিন্যাস। পূর্ণ প্রস্ফুটিত মঞ্জরির রঙ সাদা-হলুদে মেশানো হলেও হলুদ-সাদার আধিক্যে প্রচ্ছন্ন। প্রতিটি ফুল খুবই ছোট, বৃতি সাদা, দল হলুদ, পরাগচক্র সাদা এবং বহির্মুখীন, গর্ভদণ্ড দীর্ঘ। বীজ ও কলম থেকে গাছ উৎপন্ন হয়। বর্ষাকালে এই গাছ রোপন করা হয়ে থাকে। এই গাছ বাংলাদেশ সহ নেপাল, ভারত, শ্রীলংকা, মায়ানমার, মালয়েশিয়ায় জন্মে। এই গাছের ছাল, কান্ড, পাতা, ফল, ফূল ফুলের রেণু ঔষধ হিসাবে ব্যবহৃত হয়।
উপকারিতা:
১। কদম পাতার ক্বাথ ক্ষতে ও মুখের ঘায়ে লাগালে উপকার পাওয়া যায়।
২। কদমের ছালের রস চিনির সাথে মিশিয়ে খেলে শিশুর বমি নিবারিত হয়।
৩। প্রবল জ্বরে যখন পিপাসা পায়, তখন কদম ফলের রস সেবন করালে পিপাসা নিবারিত হয়।
৪। কোন স্থানে বেদনা হলে কদমের নির্যাস উপকারী।
৫। কদম গাছের ছাল চন্দনের মতো বেটে লাগালে ব্যথা ও ফোলা কমে যায়।
৬। কদম পাতার রস খেলে কৃমি ভালো হয়ে যায়।
৭। কদম ফুল কেটে সিদ্ধ করে সেই পানি দিয়ে কুলকুচি করলে মুখের দুর্গন্ধ ভালো হয়।