বট
বট (Indian banyan) এটি একটি বৃহদাকার বৃক্ষ জাতীয় উদ্ভিদ। এর বৈজ্ঞানিক নাম Ficus benghalensis। এটি ফাইকাস বা (ডুমুর জাতীয়) গোত্রের ইউরোস্টিগ্মা উপগোত্রের সদস্য। এর আদি নিবাস হল বঙ্গভূমি বাংলাভাষী অঞ্চল। বট গাছ খুব বড় জায়গা জুড়ে জমির সমান্তরাল শাখাপ্রশাখা বিস্তার করে যারা স্তম্ভমূলের উপর ভর দিয়ে থাকে। স্তম্ভমূল প্রথমে সরু সরু ঝুরি হিসবে বাতাসে ঝোলে। পরে মাটিতে প্রেথিত হলে স্তম্ভমূলের মাটির উপরের অংশ বিটপে পরিবর্তিত হয়। বটের পাতা একান্তর, ডিম্বাকৃতি, মসৃণ ও উজ্জ্বল সবুজ। কচি পাতা তামাটে। স্থান-কাল-পাত্রভেদে পাতার আয়তনের বিভিন্নতা একাধারে বটের বৈশিষ্ট্য তথা প্রজাতি শনাক্তকরণের পক্ষে জটিলতার কারণও। পরিণত গাছের পাতা আকারে কিছুটা ছোট হয়ে আসে। বটের কুঁড়ি পাংশুটে হলুদ এবং এর দুটি স্বল্পায়ু উপপত্র পাতা গজানোর পরই ঝরে পড়ে। খুব অল্প বয়স থেকেই বট গাছের ঝুরি নামতে শুরু করে। মাটির সমান্তরালে বাড়তে থাকা ডালপালার ঝুরিগুলো একসময় মাটিতে গেঁথে গিয়ে নিজেরাই একেকটা কান্ডে পরিণত হয়। এভাবেই বট গাছ ধীরে ধীরে চারপাশে বাড়তে থকে এবং একসময় মহীরুহে পরিণত হয়। বসন্ত ও শরৎ বট গাছে নতুন পাতা গজানোর দিন। এসময় কচি পাতার রং উজ্জ্বল সবুজ থাকে। গ্রীষ্ম-বর্ষা-শীতহলো ফল পাকার সময়। এটি চিরহরিৎ সাইকাস বহুবর্ষজীবি গাছ। উপযুক্ত পরিবেশে একটি বট গাছ ৫ থেকে ৬ শত বছর বেঁচে থাকতে পারে। বাংলাদেশ ও ভারতে এই বেশি জন্মে। এই গাছের আঠা, ফল,বটের ঝুরি, ছাল,বাকল সবই ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
উপকারিতা :
১। বট ছালের ক্বাথে লোধ ছাল মিশিয়ে খেলে শ্বেত প্রদরে উপকার পাওয়া যায়।
২। বটের আঠার প্রলেপ দিলে হাত- পা ফাটা ভালো হয়।
৩। দাঁতে পোকা হলে বটের আঠা লাগালে ব্যথা ভালো হয়ে যায়।
৪। বটের আঠা ফোঁড়া ওপর লাগালে ফোঁড়া দ্রুত ভালো হয়ে যায়।
৫। খোস রোগ হলে বটের কচি পাতা বেটে প্রলেপ লাগালে ভালো হয়।
৬। কচি বটপাতা বেটে মধু সহ খেলে রক্তপিওে উপকার পাওয়া যায়।
৭। বটের কুঁড়ি চাল ধোয়া পানির সঙ্গে বা ঘোলের সঙ্গে পান করলে অতিসারে উপকার পাওয়া যায়।
৮। মুসুর ডাল ও বটের অঙ্কুর একসঙ্গে পিষে মুখে লাগালে মেছতা ভালো হয়।
৯। বটের ঝুরির কোমল ডগা চাল ধোয়া পানির সঙ্গে বেটে খেলে আমাশয় ভালো হয়।