লিচু
লিচু ( Litchi) লিচু আমাদের সবার কাছে খুব পরিচিত রসালো ফল। এর বৈজ্ঞানিক নাম Litchi chinensis। লিচুর গাছ ১০-৩৫ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট হয়ে থাকে এবং এর ব্যাস সাধারণত ১-১.৫ ইঞ্চি। বাংলাদেশে এটি গ্রীষ্মকালীন ফল এবং এখানে ফেব্রুয়ারিতে এর মুকুল আসে ও ফল সাধারনত মে মাসের দিকে পাকে। বাংলাদেশের সব স্থানেই লিচু হয়, তবে উত্তরবঙ্গের রাজশাহী ও দিনাজপুর অঞ্চলে এর ভাল ফলন হয়। এই এলাকার মঙ্গলবাড়িয়া লিচু বড় আকার ও সুস্বাদের জন্য বিশেষ জনপ্রিয়। এছাড়াও ভারত, মায়ানমার, ভিয়েতনাম, ফিলিপাইন, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ব্রাজিল সহ বিশ্বের কর্কটক্রান্তি ও মকরক্রান্তিয় বহু দেশে লিচু চাষ করা হয়ে থাকে। লিচুর যেমন পুষ্টিগুণ রয়েছে তেমনি প্রচুর ঔষধি গুনাগুন ও রয়েছে।
পুষ্টিগুণ:
লিচুর অনেক পুষ্টিগুন রয়েছে।প্রতি ১০০ গ্রাম লিচুতে ১০ মি.গ্রা ক্যালসিয়াম, ০.৭ মি.গ্রা লৌহ, ০.০২ গ্রাম ভিটামিন বি ১, এবং ০.০৬ গ্রাম বি ২ রয়েছে। ক্যালসিয়াম দেহের হাড় গঠন করে ও হাড়ের সুস্থতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। শক্তির ভালো উৎস লিচু। প্রতি ১০০ গ্রাম লিচু থেকে ৬১ কিলোক্যালরি শক্তি পাওয়া যায়। এটি শরীরের কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়। পাশাপাশি চর্বি কমাতে সাহায্য করে। লিচুতে খাদ্য হজমকারী আঁশ, ভিটামিন এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট আছে যা শরীরে জমে থাকে ও দেহ সুস্থ রাখে।
উপকারিতাঃ
১। লিচু ত্বক ভালো রাখে। সেই সঙ্গে ত্বকের কালো দাগ দূর করার ক্ষমতা আছে লিচুর।
২। লিচুতে রয়েছে ফ্ল্যাভনয়িডস বা ভিটামিন সি যা স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধ করে।
৩। লিচুতে প্রচুর দ্রবণীয় ফাইবার থাকে তাই লিচু খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য রোধ হয়।
৪। লিচু খেল হার্টএটাক, স্ট্রোক ও হাইপার টেনশনের ঝুঁকি কমে।
৫। লিচুতে ভিটামিন সি রয়েছে তাই লিচু খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।
৬। লিচুতে প্রচুর পরিমানে ক্যালরি থাকে, যা আমাদের শক্তি যোগাতে সহায়তা করে।
৭। লিচুতে থাকা কার্বোহাইড্রেট ও ফাইবার যা হজমে শক্তি করতে সাহায্য করে।
৮। লিচু প্রচণ্ড ক্ষতিকর আলট্রাভায়োলেট রশ্মি থেকে শরীরকে রক্ষা করে।
৯। লিচুতে থাকা নিয়াসিন ও রিবোফ্লাভিন নামক ভিটামিন ‘বি’ কমপ্লেক্স শরীরের জ্বালাপোড়া, দুর্বলতা দূর করে।
১০। টিউমার হলে লিচু খেলে উপকার পাওয়া যায়।
১১। লিচুতে থাকা ক্যালসিয়াম আমাদের দেহের হাড়, দাঁত, চুল, ত্বক, নখ ভালো রাখতে সহায়তা করে।
১২। পোকামাকড় কামড়ালে লিচুর পাতার রস লাগালে ব্যথা ভালো হয়ে যায়।