মিষ্টি আলু
মিষ্টি আলু (Sweet potato) এটি একটি লতানো বীরুৎ। এর বৈজ্ঞানিক নাম Ipomoea batatas Convolvulaceae পরিবারের pomoea গণের অন্তর্ভুক্ত। দক্ষিণাঞ্চলে অগ্রহায়ণ মাসের ১ম সপ্তাহ থেকে ২য় সপ্তাহে (নভেম্বর মাসের মধ্য থেকে শেষ সপ্তাহ) চাষাবাদ করার উপযুক্ত সময়। দোআঁশ ও বেলে-দোআঁশ মাটি আলুর জন্য সব চাইতে উপযোগী৷ এটেল-দোআঁশ মাটিতেও আলুর চাষ করা যায়, তবে এই রকম মাটিতে আলু খুব একটা ভালো হয় না৷ আলুর মাটি সুনিষ্কাশনযুক্ত, গভীর ও কিছুটা অম্লাত্মক হওয়া চাই৷ PH ৫.৫-৬০ এর মধ্য হওয়া বাঞ্ছনীয়, এতে আলুর জন্য ক্ষতিকর রোগ স্কেভিস হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না৷ আমাদের দেশে মিষ্টি আলুর জাতগুলোর মধ্যে রয়েছে। যেমন-বারি মিষ্টি আলু-১, বারি মিষ্টি আলু-২, বারি মিষ্টি আলু-৩, বারি মিষ্টি আলু-৪, বারি মিষ্টি আলু-৫। লতার সংখ্যা প্রতি শতকে ২২০-২৩০ টি প্রয়োজন হয়। লতার মাথা থেকে ১ম ও ২য় খন্ড রোপণ করা উচিত। সারি থেকে সারির দূরত্ব ৬০ সেমি এবং আলু থেকে আলুর দূরত্ব ৩০ সেমি হতে হবে। সমতল পদ্ধতিতে সারি তৈরি করে লাগাতে হবে যাতে ২-৩ টি গিট মাটির নিচে থাকে। মিষ্টি আলু বাংলাদেশ সহ ভারত, নেপাল, ভুটান, পাকিস্তান, আমেরিকা, আফ্রিকাসহ নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে জন্মে থাকে। মিষ্টি আলু ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
পুষ্টিগুণ:
মিষ্টি আলুতে রয়েছে প্রচুর পুষ্টি। এতে রয়েছে শর্করা, শ্বেতসার, চিনি, খাদ্যে ফাইবার, স্নেহ পদার্থ, প্রোটিন। এছাড়াও ভিটামিন এ,ভিটামিন বি ও ভিটামিন সি রয়েছে।
উপকারিতাঃ
১। মিষ্টি আলুতে রয়েছে প্রাকৃতিক অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। তাই নিয়মিত মিষ্টি আলু খেলে ক্যান্সার প্রতিরোধ হয়।
২। মিষ্টি আলুর পাতা শাকের মত রান্না করে খেলে ফুসফুসের ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে।
৩। মিষ্টি আলুর খোসাও অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে ভরপুর। এই মিষ্টি আলুর খোসা মাথা, ঘাড়, স্তন, মলাশয় এবং ডিম্বাশয়ের কোষের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি রহিত করে এ সকল ক্যান্সার প্রতিরোধ করে।
৪। নিয়মিত মিষ্টি আলু খেলে হৃদপিণ্ড ভালে থাকে।
৫। মিষ্টি আলুতে রয়েছে ভিটামিন ‘এ’ এবং ভিটামিন ‘সি’। তাই মিষ্টি খেলে ও প্যাক তৈরি করে মুখের বালিরেখা ও ত্বকের বলিরেখা দূর হয় এবং ত্বককে করে তুলে উজ্জ্বল।
৬। আগুনে পোড়া ক্ষত এবং আঘাতে হওয়া ক্ষত রোধে ওষুধের পাশাপাশি মিষ্টি আলু খেলে উপকার পাওয়া যায়।
৭। নিয়মিত মিষ্টি আলু খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে থাকে।
৮। মিষ্টি আলুতে রয়েছে ভিটামিন ‘এ’ তাই নিয়মিত মিষ্টি আলু খেলে চোখের দৃষ্টিশক্তি ভালো থাকে।
৯। বেগুনি শাঁসযুক্ত এই আলু ভিটামিন D-র শক্তিশালী উৎস। থাইরয়েড গ্ল্যান্ড, দাঁত, ত্বক, হার্ট, স্নায়ু, হাড় ও দেহের শক্তির মাত্রা বাড়ায়।
১০। মিষ্টি আলু খেলে ওজন নিয়ন্ত্রনে থাকে।