মুগ ডাল
মুগ ডাল মূলত খাড়া বা অর্ধ-গড়ানো বর্ষজীবী গুল্ম। মুগ লেগুম পরিবারের একটি উদ্ভিদ প্রজাতি।আমাদের দেশে বিভিন্ন প্রকারের ডালের চাষ করা হয় এর মধ্যে মুগডাল অন্যতম। মুগ ডালে প্রচুর পরিমানে খাদ্য শক্তি ও প্রোটিন আছে। মুগ একইসাথে মসলাদার এবং মিষ্টি খাবারের উপাদান হিসেবে ব্যবহার করা হয়।আমাদের দেশে কয়েকটি জাতের মুগডাল রয়েছ। যেমনঃ বিনামুগ-১, বিনামুগ-৩, বিনামুগ-৪ ও বিনামুগ-৫ ইত্যাদি। বছরের পুরো সময় জুড়েই হলুদ ফুল এবং হালকা বাদামি রঙের বীজ ফলায় বেলে দো-আঁশ ও পলি দো-আঁশ মাটি, মাঝারি উঁচু এবং সুনিষ্কাশিত জমি মুগ আবাদের জন্য উপযোগী। গুঁটি বাদামি বা কালো রং হলে বুঝতে হবে ফল পরিপক্ব হয়েছে৷ বীজ বপনের পর থেকে ৬০ থেকে ঌ০ দিনের মধ্যে মুগ ডাল সংগ্রহের উপযুক্ত সময়৷ সঠিক সময়ে ফসল সংগ্রহ করলে বেশি ফলন পাওয়া যায়৷ ডালজাতীয় ফসল বিলম্বে কর্তন করলে দানা ঝরে যায়৷ মুগ ডাল বাংলাদেশ সহ ভারত,পাকিস্তান, নেপাল, মায়ানমার, থাইল্যান্ড, ফিলিপাইন, ইন্দোনেশিয়া, চীন, এবং কোরিয়ায় মুগের চাষ করা হয়ে থাকে। মুগ ডাল অনেক উপকারী। তাই মুগ ডাল ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
পুষ্টিগুণঃ
মুগডাল খুবই পুষ্টিকর। কারন মুগ ডালে রয়েছে ২১২ ক্যালরি, ১৪ গ্রাম প্রোটিন, ১৫ গ্রাম ফাইবার, ১ গ্রাম ফ্যাট, ৪ গ্রাম শর্করা, ৩২১ মাইক্রোগ্রাম ফলেট, ৯৭ মিলিগ্রাম ম্যাগনেসিয়াম, ০.৩৩ মিলিগ্রাম ভিটামিন বি১ এবং ৯৭ মিলিগ্রাম ম্যাঙ্গানিজ।
উপকারিতাঃ
১। মুগ ডালে রয়েছে কপার তাই মুগ ডাল পেস্ট করে মুখে লাগালে মুখের উজ্জ্বলতা বাড়ে।
২। মুগ ডালের গুঁড়ো নিয়ে তার সঙ্গে গ্রিন টি মিশিয়ে একটা পেস্ট বানিয়ে নিতে হবে। তারপর এতে অল্প পরিমাণে অলিভ অয়েল এবং বাদাম তেল মিশিয়ে চুলে লাগালে চুল পড়া বন্ধ হয় এবং চুলের উজ্জ্বলতা বাড়ে।
৩। মুগডালে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস এবং অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল প্রপাটিজ। তাই নিয়মিত মুগডাল খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
৪। মুগ ডালে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় অ্যামাইনো অ্যাসিড এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। তাই মুগডাল নিয়মিত খেলে ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে।
৬। ভাজা মুগের ডাল ঘন করে রান্না করে তাতে মুড়ি মধু ও চিনি মিশিয়ে খেলে শরীরের জ্বালা দূর হয়, জ্বরে ও পেটের অসুখে উপকার দেয়।
৭। মুগের ডালের খিচুড়ি অসুস্থ শরীরে খেলে মুখের অরুচি ভাব কেটে যায়।
৮। মুগের ঘন ডালের চেয়েও মুগের পাতলা জুস বেশি উপকারী। মুগ অল্প বায়ুকারক হলেও এই জুস খেলে বায়ু সৃষ্টি করে না।
৯। পুরোনো জ্বরে এবং অন্যান্য অসুখে মুগের জুস খেলে উপকার পাওয়া যায়।
১০। মুগ ডালে প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করে। তাই নিয়মিত মুগডাল খেলে ওজন কমে।