কাঁটা নটে
কাঁটা নটে বর্ষজীবী গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ। এর বৈজ্ঞানিক নাম Amaranthus spinosus এবং স্থানীয় নাম কাঁটাখুইড়া, খুড়াকাঁটা। এটি Amaranthaceae পরিবারের অন্তভূক্ত। সাধারণ ভাবে এর কান্ড এক থেকে দেড় ফুট পর্যন্ত লম্বা হতে দেখা যায়। কান্ড শক্ত গাঁটযুক্ত এবং কাঁটায় ভরা থাকে। পাতার আকৃতি অনেকটা ছোট। পাতার আগার দিকটা ক্রমশ সরু। ফুলের রং ফিকে সবুজ, গুচ্ছবদ্ধ অবস্থায় থাকে। বীজ থেকে বংশবিস্তার হয়ে থাকে। বীজের রং কালো তবে রং উজ্জ্বল হয়ে থাকে। বর্ষার শেষে গাছে ফুল ফোটে, আশ্বিন মাসে ফল ধরে। পতিত জমি ও ক্ষেতের আইলে নিজে থেকেই জন্মে থাকে। এমনকি শাক-সবজির ক্ষেতেও দু’চারটে কাঁটা নটে দেখতে পাওয়া যায়। একে কাটিং এর মাধ্যমেও বংশ বিস্তার ঘটানো যায়। কাঁটা নটে বাংলাদেশের সর্বত্র জন্মে। কাঁটা নটে ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
পুষ্টিগুণঃ
কাঁটা নটে রয়েছে প্রচুর পুষ্টিগুন। এতে রয়েছে প্রোটিন, ভিটামিন-এ, ভিটামিন-বি৬, ভিটামিন-সি, ভিটামিন-কে, থায়ামিন, রিভাফ্লাভিন, নিয়াসিন, Pantothenic acid। এছাড়াও রয়েছে ক্যালসিয়াম, আইরন, ম্যানেসিয়াম, ফসফরাস, পটাশিয়াম, সোডিয়াম, জিঙ্ক, কপার, ম্যাঙ্গানিজ, সেলেনিয়াম, আরও রয়েছে Histidine, Isoleucine, Leucine, Threonine লাইসিন, ট্রিপটোফেন।
উপকারিতাঃ
১। কাঁটা নটের গাছের টাটকা মূল এবং পাতা পানি দিয়ে সেদ্ধ করে নিন। এই পানি ঘায়ে দিলে ঘা দ্রুত ভালো হয়ে যাবে।
২। কাঁটা নটে গাছের পাতা, কান্ড, মূল ভালোভাবে শুকিয়ে তাকে আগুনে পুড়িয়ে সে ছাই নারকেল তেলের সঙ্গে মিশিয়ে খোস-পাঁচড়ায় প্রয়োগ লাগালে চর্ম রোগ ভালো হয়।
৩। কাঁটা নটে গাছের কচি ডাল ও পাতা বেটে ফোঁড়া বা বাগীতে প্রলেপ দিলে ফোঁড়া ভালো হয়।
৪। কাঁটা নটের শিকড় সামান্য পানি দিয়ে বেটে তার সম্পূর্ণ রস আধা কাপ ঠান্ডা পানিতে মিশিয়ে চিনি বা মিছরির গুঁড়া কিংবা সমপরিমাণ মধু মিশিয়ে খেলে জ্বরে উপকার পাওয়া যায়।
৫। মাথা ব্যথা হলে কাঁটা নটের মূল এবং গোলমরিচ, সামান্য পানি দিয়ে বেটে কপালে প্রলেপ দিলে মাথা ব্যথা ভালো হয়।
৬। পেটে যন্ত্রণা হলে কাঁটা নটের মূল সিদ্ধ করে খেলে উপকার পাওয়া যায়।