পটল
পটল( pointed gourd) এটি একটি লতানো উদ্ভিদ। এর বৈজ্ঞানিক নাম Trichosanthes dioica Roxb। এটি Cucurbitaceae গোত্রের। এই লতার প্রতিটি গাঁইট থেকে মূল বের হয়। এর পাতা বেশ খসখসে। পাতার দৈর্ঘ্য প্রায় ৭.৫০ সেন্টিমিটার এবং প্রস্থ প্রায় ৫ সেন্টিমিটার। পাতার অগ্রভাগ সরু। দেখতে প্রতীকী হৃদপিণ্ডাকার। এর বোঁটা পশমযুক্ত। বোঁটার দৈর্ঘ্য প্রায় ১.৫ সেন্টিমিটার। পটল গাছের ফুলগুলো একলিঙ্গিক। এর পুরুষ ফুলগুলো জোড়া জোড়া থাকে। স্ত্রীফুল এককভাবে দেখা যায়। স্ত্রীফুলে পুষ্পদণ্ড বেশ ছোট। এর পুষ্পনলের দৈর্ঘ্য প্রায় ৩ সেন্টিমিটার। পটল ফল দৈর্ঘ্যে প্রায় ৬-১৫ সেন্টিমিটার হয়ে থাকে। ফলটি প্রায় গোলাকার সিলিণ্ডারের মতো, কিন্তু ফলের উভয় প্রান্ত অপেক্ষাকৃত কম ব্যাসযুক্ত হয়ে থাকে। কাঁচা ফলের রঙ সবুজ। পাকলে হলদেটে হয়ে যায়। এর দৈর্ঘ্য বরাবর ৯-১০টি সাদাটে চওড়া রেখা থাকে। এর বীজচেপ্টা, কিনারা ঢেউ খেলানো। গাছের দৈহিক বৃদ্ধি এবং ফলনের জন্য উষ্ণ এবং আর্দ্র আবহাওয়া প্রয়োজন। পটলের জন্য উচ্চতর তাপমাত্রা এবং অধিক সূর্যালোক প্রয়োজন হয়। বৃষ্টিপাতের আধিক্য ফুলের পরাগায়নে বিঘ্ন ঘটায় এবং ফলন কমে যায়।বেলে দো-আঁশ থেকে দো-আঁশ মাটি পটল চাষের জন্য উপযোগী।বর্ষার শেষে আশ্বিন-কার্তিক মাস এবং শীতের শেষে ফাল্গুন-চৈত্র মাস পটল লাগানোর উপযুক্ত সময়। পটল চাষের জন্য বীজ, শাখা কলম ও কন্দ মূল সব পদ্ধতিতেই পটলের বংশ বিস্তার করা যায়। এটি বাংলাদেশ, ভারতের পূর্বাঞ্চলে বিশেষ করে উড়িষ্যা, পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, বিহার, উত্তর প্রদেশে ভালো জন্মায়। পটলের বীজ ও মূল ঔষধি হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
পুষ্টিগুন :
পটলে রয়েছে প্রচুর পরিমানে পুষ্টি । কারন প্রতি ১০০ গ্রাম পটলে রয়েছে ২.৪ গ্রাম প্রোটিন, ৪.১ গ্রাম শ্বেতসার, ০.৬ গ্রাম চর্বি, ৭৯০ মা.গ্রা. ক্যারোটিন, ০.৩০ মি.গ্রা. ভিটামিন বি-১, ০.০৩ মি.গ্রা. ভিটামিন বি-২, ২৯ মি.গ্রা. ভিটামিন সি, ২০ মি.গ্রা. ক্যালসিয়াম, ১.৭ মি.গ্রা. আয়রন, এবং ৩১ কিলো ক্যালরি খাদ্যশক্তি।
উপকারিতা :
১। পটলের বীজ চূর্ণ করে হালকা গরম দুধের সাথে মিশিয়ে খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য ভালো হয়।
২। পটলে ফাইবার থাকে তাই পটল খেলে হজমশক্তি বৃদ্ধি পায়।
৩। পটলের তরকারি খেলে ওজন কমে।
৪। নিয়মিত পটল খেলে রক্ত পরিষ্কার থাকে এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ে।
৫। ঠাণ্ডা, জ্বর ও গলা ব্যথা হলে পটলের বীচি চূর্ণ করে দুধের সাথে মিশিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যায়।
৬। পটলে ভিটামিন এ ও সি থাকে এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে বলে ত্বকের জন্য উপকারী।
৭। পটলের রস মাথায় লাগালে মাথা ব্যাথা দূর হবে এবং যাদের অল্প বয়সে টাকের সমস্যা রয়েছে তাদের টাক সমস্যা দূর হবে।