স্বর্ণলতা
স্বর্নলতা একটি পরজীবী উদ্ভিদ। এর স্বর্ণলতা বৈজ্ঞানিক নাম Cuscuta Reflexa। এই গাছে কোন পাতা নেই, লতাই এর দেহ কান্ড মূল সব। লতা হতেই বংশ বিস্তার করে। এই লতার স্বাদ তেতো, কচলালে আঠালো ধরনের হয়। সোনালী রং এর চিকন লতার মত বলে এইরূপ নামকরণ। স্বর্নলতা অন্য গাছের উপর নির্ভর করে জন্মে। হলুদ-সোনালি রঙের, নরম ও সরু। পত্রহীন হলেও শাখা-প্রশাখা অসংখ্য। সাধারণত ছোট ও মাঝারি উচ্চতার গাছ বা বেড়ার গাছে জোঁকের মতো জড়িয়ে থাকে। এভাবে আশ্রয়দাতা গাছের কাণ্ডে নিজের মূল কাণ্ড গেঁথে তার সাহায্যে খাদ্য সংগ্রহ করে। তার পর নিজের শাখা-প্রশাখায় জড়িয়ে নেয় গাছটিকে। একসময় মূল কাণ্ড খুঁজে পাওয়া যায় না। বসন্ত-গ্রীষ্মে পত্রহীন লতায় ছোট মঞ্জরিদণ্ডে সাদা রঙের ফুল ফোটে। দেখতে অনেকটা ছোট বাতির মতো, মাথায় পাঁচ পাপড়ি, পরাগকেশর অনেকটাই অদৃশ্য। বোঁটা বেশ ছোট এবং গুচ্ছবদ্ধ। ফল পাকে বসন্তের শেষে বা বর্ষায়। বাংলাদেশ ও ভারতের সর্বত্র সহজলভ্য। এখানে চার প্রজাতির লতা দেখা যায়। সারা পৃথিবীতে এই গণে হলুদ, কমলা ও লাল রঙের ১০০ থেকে ১৭০ প্রজাতির সন্ধান পাওয়া যায়। গাছের বীজ ও কাণ্ড ঔষধি গুণে ভরা। এই গাছ বাংলাদেশের সর্বত্র পাওয়া যায়।
উপকারিতাঃ
১। স্বর্ণলতা থেঁতো করে সেবন করলে জন্ডিস রোগ ভালো হয়।
২। স্বর্ণলতা সিদ্ধ করে সেই পানি সেবন করলে পিত্তজনিত রোগে উপকার পাওয়া যায়।
৩। ক্ষতে স্থানে স্বর্ণলতা পিষে প্রলেপ দিলে ক্ষত দ্রুত ভালো হয়।
৪। মুখে অরুচি ভাব দেখে দিলে স্বর্ণলতা সিদ্ধ করে সেই পানি সেবন করলে অরুচি ভাব কেটে যায়।
৫। স্বর্ণলতার বীজ চূর্ণ করে খেলে কৃমি ভালো হয়।
৬। পেটের বায়ুনাশে সমস্যা দেখা দিলে স্বর্ণলতার বীজ চূর্ণ করে খেলে উপকার পাওয়া যায়।
৭। মুখে ঘা হলে স্বর্ণলতা সিদ্ধ করে সেই পানি দিয়ে কুলকুচি করলে ঘা দ্রুত ভালো হয়।