শুষনি
শুষনি একটি অপুষ্পক ফার্ণ জাতীয় উদ্ভিদ। এর বৈজ্ঞানিক নাম Marsilea quadrifoliata L। এটি Marsileaceae পরিবারের উদ্ভিদ। বাংলাদেশের অধিকাংশ এলাকায় এই কুড়িয়ে পাওয়া শাকটি শুষনি শাক নামেই বেশী পরিচিত। বাংলাদেশের বিভিন্ন সমতল এলাকার গ্রামে পাওয়া যায়। নিচু জমিতে, জলাভূমির কিনারে, ভেজা ও স্যাঁতস্যাতে জায়গায় বেশী জন্মে। যেখানে জন্মে সেখানেই বিস্তৃতি দেখা যায়। এই শাকটি আকারে মাটি থেকে প্রায় দুই ইঞ্চি প্রস্হ হয়। শাকটির আগালে (কান্ডের মাথায়) চারটি পাতা থাকে যা আকারে গোলাকৃতি, তবে প্রত্যেকটি পাতা পরস্পর বিচ্ছন্ন ও পাতার মাঝে খাজ কাটা থাকে। পাতার রং সবুজ । শাকটি খুবই নরম। এই শাক একটু মিষ্টি স্বাদের। সাধারণত অগ্রহায়ন মাসে এই শাক পতিত জমিতে প্রচুর পরিমাণে জন্মে। এছাড়া বর্ষার পরবর্তী সময়ে বাড়ীর আশে পাশের স্যাঁত স্যাঁতে জমিতে এই শাক পাওয়া যায়। ইরি মৌসুম শুরুর সাথে সাথে এই শাক জমিতে আর দেখতে পাওয়া যায় না। তবে বাড়ীর আশ পাশে জমিতে সামান্য পরিমাণে দেখা যায়। বর্ষাকালে এই শাক দেখা যায়। বাংলাদেশের পাশাপাশি ভারতের বিভিন্ন প্রদেশের জলাভূমিতে এবং পুকুরের ধারে এই শাক প্রচুর পরিমানে জন্মায়। এর পাতা মূলত ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
উপকারিতা :
১। শুষনি শাক বেটে অথবা শুষনি শাকের রস করে দংশন স্থানে প্রলেপ দিলে জ্বালা যন্ত্রণা কমে যায়।
২। স্মৃতিশক্তি কমে গেলে শুষনি শাকের রস গাওয়া ঘিয়ের সাথে পাক করে নিয়ে বোতলে রাখুন। এবার প্রতিদিন সেবন করলে উপকার পাওয়া যাবে।
৩। প্রসাবের সময় জ্বালা করলে কাঁচা শুষনি শাক সেদ্ধ করে সেই পানি সেবন করলে উপকার পাওয়া যায়।
৪। অনিদ্রার সমস্যা দেখা দিলে শুষনি শাক পানি সেদ্ধ করে। দুধের সাথে মিশিয়ে প্রতিদিন সন্ধ্যায় খেলে অনিদ্রা কেটে যায়।
৫। হাঁপানি রোগে খুব কষ্ট হলে বা কফের পরিমান বেশি থাকলে। শুষনি শাক সেদ্ধ করে সেই পানি বা ক্বাথ সেবন করলে উপকার পাওয়া যায়।
৬। রক্তচাপ বেশি হলে শুষনি শাক বেটে অল্প চিনি মিশিয়ে শরবত বানিয়ে খেলে রক্তচাপ কমে যায়।