Logo
ঢাকা, শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারি, ২০২৫
কারিপাতা

কারিপাতা

Desk | আপডেট : ৬ ডিসেম্বর, ২০১৮ ১৩:৩৩
কারিপাতা

কারিপাতা (Barsunga) একটি ছোট উদ্ভিদ। এর বৈজ্ঞানিক নাম Murraya koenigii অথবা Bergera koenigii। এটি Rutaceae গোত্রের একটি উপকূলীয় ( tropical বা sub-tropical ) উদ্ভিদ। এই গাছ  ৪-৬ মিটার (১৩-২০ ফিট) উঁচু হয়, যার গুড়ির ব্যাস ৪০ সেমি (১৬ ইঞ্চি) পর্যন্ত হয়।সুগন্ধি পাতাগুলো পক্ষল, প্রতি গুচ্ছে ১১-২১ টি করে পাতা, প্রতিটি পাতা ২–৪ সেমি (০.৭৯–১.৫৭ ইঞ্চি) লম্বা এবং ১–২ সেমি (০.৩৯–০.৭৯ ইঞ্চি) প্রশস্ত। এই গাছে ছোট সাদা ফুল ফোটে যা নিজে নিজে পরাগায়িত হয়ে ছোট চকচকে রসালো ফল উৎপন্ন করে যার ভেতর একটি মাত্র, বড় এবং টেকসই বীজ থাকে। যদিও ফলটির শাঁস খাওয়া যায়। যেটি মিষ্টি এবং ঔষধের মত গন্ধযুক্ত। সাধারণভাবে, শাঁস বা বীজ কোনটিই রান্নার কাজে ব্যবহার করা হয় না। মূলত কারি বা ঝোল তরকারি রান্নার জন্য এ গাছের পাতা ব্যবহার করা হয়। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৫০০ মিটার উঁচুতেও কারিপাতা গাছ জন্মাতে পারে। বীজ থেকে প্রথমে চারা তৈরি করে নিতে হবে। বর্ষার শুরুতে ২-৩ মিটার পর পর জমিতে চারা লাগাতে হবে। চারা লাগানোর জন্য সবদিকে আধা মিটার আন্দাজে গর্ত তৈরি করে গর্তের মাটির সাথে এক ঝুড়ি গোবর সার মিশিয়ে সপ্তাহ দুয়েক রেখে দিতে হবে। জুন-জুলাই মাসে চারা লাগাতে হবে। প্রতি বছর জুলাই মাসে একবার গাছপ্রতি ১০০-২০০ গ্রাম ইউরিয়া সার দিতে হবে। খরার সময় সেচ দিলে উপকার হয়। গাছের বয়স ১৫ মাস হলেই গাছ থেকে পাতা তোলা শুরু করা যায়। এই গাছ বাংলাদেশ সহ ভারত এবং শ্রীলঙ্কায় জন্মে। কারিপাতা, গাছ, শিকড় সবই ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

পুষ্টিগুণঃ

সুগন্ধি মসলা হিসেবে সবুজ পাতা রান্নায় ব্যবহার করা যায়। এই পাতায় রয়েছে ৬.১% প্রোটিন, ১.০% তেল, ১৬% শ্বেতসার, ৬.৪% আঁশ ও প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ এবং ভিটামিন সি।

উপকারিতাঃ

১। কারিপাতা খেলে দৃষ্টিশক্তি উন্নতিতে সহায়ক হয়। চোখের ছানি প্রতিরোধ করতে পারে।

২। কারি পাতা থেকে রস বের করে নিন এবং এটি তাজা লেবুর রস এবং চিনির সঙ্গে মিশিয়ে খেলে বমি বমি ভাব এবং বদহজম ভালো হয়।

৩। কারিপাতা পেস্ট বা রস করে খেলে ডায়রিয়া ভালো হয়।

৪। নিয়মিত কারিপাতা খেলে শরীরের খারাপ কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ থাকে এবং আপনার শরীরকে চর্বিমুক্ত করতে সাহায্য করে।

৫। কারি পাতা কেমোথেরাপি এবং বিকিরণ থেরাপির জন্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হ্রাস করতে সাহায্য করে।

৬। এটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ভালো খাবার। এটি রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। প্রাতরাশে কারি পাতার পাউডার ব্যবহার করা ভালো।

৭। কারি পাতায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস এবং অ্যালকালয়েড রয়েছে। গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল নালীর পক্ষে এবং পাচনতন্ত্র উন্নত করার ক্ষেত্রে এটি বেশ ভালো।

৮। কারিপাতা গাছের শিকড় সিদ্ধ করে সেই পানি সেবন করলে অর্শ ভালো হয়।

৯। শরীরের কোথাও কোনো বিষাক্ত পোকা কামড়ালে কাঁচা কারিপাতা ডলে সেখানে লাগালে দ্রুত উপশম হয়।

১০। যকৃতের কঠিন ব্যথা সারাতে রোগীদের কারিপাতা গাছের শিকড়ের রস খাওয়ালে উপকার পাওয়া যায়।

উপরে