আপেল
আপেল ( Apple) আমাদের দেশে খুব পরিচিত একটি ফল। এর বৈজ্ঞানিক নাম Malus pumila। এটি Rosaceae পরিবারভূক্ত গাছ। এর আদি বৃক্ষ Malus sieversii কাজাখস্তানে পাওয়া যায়।আপেল মূলত তার মিষ্টি স্বাদের জন্য জনপ্রিয় । আপেল গাছ ৫-১২ মিটার দীর্ঘ এবং চওড়া ও শাখা প্রশাখা যুক্ত শীর্ষভাগ বিশিষ্ট বৃক্ষ। আপেল ফল হেমন্ত কালে পাকে এবং ৫-৮ সেমি ব্যাসের হয়ে থাকে। এর পাতা উপবৃত্তাকার ও সবুজ। একটি পুষ্পদণ্ডে মোট পাঁচটি ফুল জন্মে। ফুলের রঙ গোলাপী। আপেল ফুলের পরাগায়ণ ঘটে থাকে মৌমাছি দ্বারা। আপেল চাষের জন্য pH 6-7 সমৃদ্ধ দোঁ-আঁশ মাটির প্রয়োজন হয়। এই গাছটি শীত প্রধান অঞ্চলের। সাধারণত ৩৫-৫০ অক্ষাংশের ভিতর এই গাছ ভালো জন্মে। তবে এই গাছের পূর্ণতা লাভের জন্য, অন্তত ১২০-১৮০ দিন কুয়াশা মুক্ত দিনের প্রয়োজন হয়। এর ফুল -৪০ ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপমাত্রায় টিকে থাকলেও ২৬-২৮ ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপমাত্রায় ফুল ও ফল ঝরে পড়ে। সারা পৃথিবীব্যপি আপেলের চাষ হয়ে থাকে। হাজার হাজার বছর ধরে এশিয়া এবং ইউরোপ জুড়ে আপেলের চাষ হয়ে আসছে। আপেল বাংলাদেশেও উত্তর আমেরিকায় যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডাতে আপেল চাষ করা হয়।
পুষ্টিগুণ:
আপেলে প্রচুর পুষ্টিগুণ রয়েছে। শর্করা ১৩.৮১ গ্রাম, চিনি- ১০.৩৯ গ্রাম, খাদ্যআঁশ ২.৪ গ্রাম, চর্বি ০.১৭ গ্রাম,আমিষ ০.২৬ গ্রাম, জলীয় অংশ ৮৫.৫৬ গ্রাম, ভিটামিন এ ৩ আইইউবিটা, ক্যারোটিন ২৭ আইইউ, লুটেইন ২৯ আইইউ, থায়ামিন ০.০১৭ মিলিগ্রাম, রিবোফ্লেভিন ০.০২৬ মিলিগ্রাম, নিয়াসিন ০.০৯১ মিলিগ্রাম, প্যানটোথেনিক অ্যাসিড ০.০৬১ মিলিগ্রাম, ফোলেট ৩ আইইউ, ভিটামিন সি ৪.৬ মিলিগ্রাম, ভিটামিন ই ০.১৮ মিলিগ্রাম, ভিটামিন কে ২.২ আইইউ,ক্যালসিয়াম ৬ মিলিগ্রাম, আয়রন ০.১২ মিলিগ্রাম, ম্যাগনেসিয়াম ৫ মিলিগ্রাম, ম্যাংগানিজ ০.০৩৫ মিলিগ্রাম, ফসফরাস ১১ মিলিগ্রাম, পটাশিয়াম ১০৭ মিলিগ্রাম, সোডিয়াম ১ মিলিগ্রাম, জিংক ০.০৪ মিলিগ্রাম, ফ্লোরাইড ৩.৩ আইইউ রয়েছে।
উপকারিতা:
১। আপেলে প্রচুর ফাইবার আছে। তাই আপেল খেলে হজমের শক্তি ভালো হয়।
২। নিয়মিত আপেল খেলে কোলন ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না।
৩। আপেল খেলে ব্লাড প্রেসার ও রক্তের glucose/ sugar নিয়ন্ত্রণে থাকে।
৪। আপেল খেলে দাঁতের অনেক উপকার হয় কারন আপেল ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে তাই দাঁতের কোনও ক্ষতি করতে পারেনা।
৫। আপেল খেলে ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে।
৬। আপেলের ফাইবার থাকে, তাই আপেল খেলে রক্তে শর্করার পরিমাণ ঠিক থাকে।
৭। আপেল খেলে হার্টে রক্তচলাচলা স্বাভাবিক থাকে। ফলে হৃদযন্ত্রের কোনও ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে না।
৮। আপেল ওজন কমাতে সাহায্য করে।
৯। আপেল খেলে লিভার সুস্থ থাকে।
১০। আপেল আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে এবং আমাদের শরীর ভাল রাখতে সাহায্য করে।