মোরগফুল
মোরগফুল( Crested Cock's Comb) এটি একটি সপুষ্পক বীরুৎ। এর বৈজ্ঞানিক নাম Celosia argentea var. cristata। এটি Amaranthaceae পরিবারের ক্রান্তীয় এশিয়ার জাত হলেও এটি বাংলাদেশে বেশ জনপ্রিয়। মোরগফুলকে মোরগঝুঁটি এবং লালমুর্গা নামেও ডাকা হয়। এই ফুলের মঞ্জরিটি দেখতে মোরগের মাথার ঝুঁটির মতো বলেই এর নাম হয়েছে মোরগঝুঁটি ফুল। এই গাছ উচ্চতায় ৪-৭ ফুট পর্যন্ত উঁচু হয়। গাছের কান্ড হতে শাখা-প্রশাখা বের হয়। শাখা-প্রশাখা ও কান্ড বেশ নরম। সারা গাছে ফুল ফুটে তবে কান্ডের ঠিক অগ্রভাগে মোরগ ঝুটি আকৃতির বড় ফুলটি ফুটে এবং শাখা-প্রশাখার ফুলগুলি আকারে ছোট আকৃতির হয়।এর কান্ড নরম ও রসালো হয়ে থাকে। কান্ড ২-৩ ইঞ্চি মোটা হয় এবং এর গায়ে অসংখ্য গিঁঠ থাকে। মোরগফুলের পাতা লম্বাটে, বর্শাফলাকৃতির। পাতার রং হলদেটে সবুজ এবং মাঝখানে লালচে ছোপ থাকে। গাছের প্রতিটি গিঁঠ থেকে গুচ্ছ আকারে পাতা গজায়। প্রতিটি গুচ্ছে থাকে ৩-৪ টা পাতা। এদের একটা পাতা বেশ বড় হলেও বাকি পাতা গুলো হয় খুব ছোট। বড় পাতার দৈর্ঘ্য গড়ে ৫ ইঞ্চি ও প্রস্থ ১-১.৫ হয়ে থাকে। ছোট পাতা ১-১.৫ ইঞ্চি লম্বা হয়। এ ফুলের পাঁপড়ি ও ফল হয়না। মোরগফুল মূলত হেমন্ত ঋতুর ফুল। মে মাসে বীজ বপন করার পর নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে গাছে ফুল ধরে এবং ফুল ফুটন্ত গাছ মার্চ মাস পর্যন্ত টিকে থাকে। তারপর ফুলগাছ আপনাআপনি মরে যায়। রৌদ্রোজ্জ্বল পরিবেশ, নিষ্কাশিত ও প্রায় সব ধরনের মাটিতে এ ফুলগাছ জন্মে। ইদানিং বাণিজ্যিক ভিত্তিতেও এ ফুলের চাষ করা হয়। এই গাছ বাংলাদেশের সর্বত্র জন্মায়। এই গাছের পাতা, শিকড়, ডালপালা, ফুলসহ সব অংশই ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
উপকারিতাঃ
১। ডায়রিয়া হলে মোরগ ফুলের পাতার রস সেবন ডায়রিয়া দ্রুত ভালো হয়।
২। প্রসাবের সমস্যা দেখা দিলে মোরগ ফুল থেঁতো করে গরম পানিতে সিদ্ধ করে সকাল বিকেল সেবন করলে উপকার পাওয়া যায়।
৩। মোরগফুলের পাতার রস গরম করে কুলকুচি করলে মুখের ঘা ভালো হয়।
৪। চোখ দিয়ে পানি পড়লে বা চুলকালে মোরগ ফুলের পাতা বেটে সেই চোখে দিলে উপকার পাওয়া যায়।
৫। রক্ত আমাশয় হলে মোরগফুল গাছের শিকড় থেঁতো করে পানি দিয়ে সেদ্ধ করে মধুর সাথে মিশিয়ে সকাল বিকেল খেলে উপকার পাওয়া যায়।
৬। শরীরে জ্বালা- পোড়া করলে মোরগফুল গাছের পাতা বেটে এই রস চিনির সাথে মিশিয়ে সকাল বিকাল সেবন করলে উপকার পাওয়া যায়।
৭। মোরগফুল ও এর পাতা বেটে শরীরে লাগালে গায়ের চুলকানি ভালো হয়।