ঝুমকোলতা
ঝুমকোলতা ( Wild water lemon) এটি একটি লতা জাতীয় উদ্ভিদ। এর বৈজ্ঞানিক নাম Passiflora Incarnata। এই গাছ প্রায় ৩০ ফুট পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। এ গাছেরপাতা দেখতে হাতের তালুর মতো। পাতায় তিনটি খাঁজ আছে এবং প্রতিটি অংশ দেখতে আঙ্গুল সদৃশ। পাতার অগ্রভাগ সুচালো। পাতার কক্ষ থেকে লতা বের হয়। ফুল একক, সুগন্ধযুক্ত। বাতাসে একটা মৌতাতানো সুবাসিত গন্ধ ছড়ায়। হালকা বেগুনি রঙের পাপড়ি বাইরের দিকে সজ্জিত থাকে। বাহারী ফুল ঝুমকোলতাএ গাছের পাতা ছিড়লে কিছুটা গন্ধ বের হয়। ঝুমকোলতা ফুলটির রঙ সাদা বা ক্রিম অথবা উভয় রঙের মিশ্রণে হয়ে থাকে। তবে সাধারণত বেগুনি রঙের আভায় বর্ণিল হয় ফুলটি। ফুলের ব্যসার্ধ ৫-৬ সেন্টিমিটার। ঝুমকোলতার ফলও হয়। ফলের আকৃতি গোলাকার। ব্যসার্ধ ২-৩ সেন্টিমিটার। পাকার সময় ফলটি হলদে কমলা থেকে লাল রঙ ধারণ করে। ফল বহুবিচিযুক্ত। ফুলটির মঞ্জরিপত্র থেকে এক ধরনের আঠালো পদার্থ নিঃসৃত হয়। এজন্য মঞ্জরিপত্রের সাহায্যে ঝুমকো লতা ক্ষতিকর পোকামাকড়দের ফাঁদে ফেলতে পারে। ফুল ফোটে গ্রীষ্মের শেষভাগে, থাকে বর্ষাকালজুড়ে। এ জন্য বর্ষার ফুল হিসেবেই এর পরিচিত। ঝুমকোলতা ফুলটি একক। লতানো গাছে একটি একটি করে সুগন্ধি ফুল ফোটে। শুকনো জায়গায় টিকে থাকতে পারলেও ভেজা জায়গা মূলত ঝুমকো লতার জন্য উপযোগী। এ গাছের ঔষধিগুণ আছে যা বিভিন্ন প্রকার রোগ-প্রতিরোধ ও নিরাময়ে ব্যবহার হয়ে থাকে। এই গাছ বাংলাদেশ সহ যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ-পশ্চিম এলাকা, মেক্সিকো, ক্যারাবিয়ান, সেন্ট্রাল আমেরিকা এবং দক্ষিণ আমেরিকায় জন্মে। দক্ষিণ-পুর্ব এশিয়া এবং হাওয়াইয়ের মতো নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলেও জন্মে ঝুমকোলতা।
উপকারীঃ
১। ঝুমকোলতা গাছের রস ব্যাথা দূর করে এবংপিঠের ব্যাথায় খুবই উপকারী।
২। ঝুমকোলতার রস অ্যালকালয়েড ব্লাড প্রেশার কমিয়ে দেয় এবং রেসপিরেটরি হার বাড়িয়ে দেয়।
৩। ঝুমকোলতা লতা মূত্রবর্ধক হিসেবে কাজ করে।
৪। ঝুমকোলতার রস কৃমিনাশক হিসেবে কাজ করে।
৫। ঝুমকোলতার গাছের মূল জীবাণু ধ্বংস করে।
৬। ঋাতুস্রাবের সময় যাদের ব্যথা হয় তাহলে ঝুমকোলতা গাছের রস ব্যবহার করলে ব্যথা কমে যায়।
৭। ঝুমকোলতার রস খেলে পাকস্থলীর সমস্যা দূর হয়।
৮। ঝুমকোলতার রস খেলে পুরুষ ও মহিলাদের যৌন সমস্যা দূর করে।
৯। এই গাছ হতে প্রাপ্ত ফ্লাভোনয়েড এজিং এর বিরেুদ্ধে শক্তিশালী উপাদান হিসেবে কাজ করে।
১০। মৃগীরোগ, কাশি, এ্যাজমা, এলার্জি দূর করে।
১১। ঝুমকোলতা পাতার রস খেলে ডায়রিয়া ও আমাশয় ভালো।
সর্তকতাঃ
গর্ভাবস্থায় এবং শিশুকে দুধ পান করানোর সময় এ ঔষধ ব্যবহার করা যাবে না।