ডিভিডিভি
ডিভিডিভি’ (Divi-Divi). বৈজ্ঞানিক নাম Caesalpinia coriaria. পরিবার Leguminosae. একই পরিবারের বেশ কতকগুলো গাছ আমাদের দেশে আছে, যেগুলো ফুলের জন্য বিখ্যাত। যেমন- রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া, কনকচূড়া, রাণীচূড়া, মিনজিরি, ন্যাটাকরঞ্জ ইত্যাদি।ডিভিডিভি ঝোপঝাড় যুক্ত, ধীরগতিতে বৃদ্ধি পাওয়া ছোট আকারের গাছ। উচ্চতা ১০ মিটার। পাহাড়ের ৯০০ মিটার উচ্চতায়ও হয়ে থাকে। তবে গাছটি গরম ও বৃষ্টি বিধৌত অঞ্চলে ভালো জন্মে। এর বাকল রুক্ষ, অমসৃণ, ফাটাফাটা, বাদামি-ধূসর রঙের। যৌগিক পত্র। পত্রকগুলো একান্তর ভাবে থাকে। একটি পত্রকে অনেক পত্রফলক থাকে, রং উজ্জ্বল সবুজ। পত্রফলকের বোঁটা খুবই ছোট ০.৫ মি.মি.। পত্রফলক লম্বায় ৮ থেকে ১০ মি.মি. ও প্রস্থে ২.৫মি.মি.। পত্রফলক বা পাতা আয়তাকার, কিনার মসৃণ, আগার মাঝখান কিছুটা ভেতরের দিকে বাঁকানো। পাতার ওপরের অংশের শিরাগুলো জালের মতো এবং স্পষ্ট।
ডিভিডিভির ফুলের মঞ্জুরি গুচ্ছাকারে হয়। কাণ্ড থেকে পুষ্পদণ্ড বের হয়। একটি পুষ্পদণ্ডের নিচ থেকে ওপর পর্যন্ত ডিম্বাকৃতি সবুজাভ অনেক কলি থাকে। ফুলগুলো পূর্ণাঙ্গভাবে ফোটে না, অর্ধেক ফুটে থাকে। ফুলের পাপড়ি ৫টি, প্রায় গোলাকার, বাইরের রং ঘিয়ে এবং ভেতরের নিচের দিকে রং ঘিয়ে হলুদের মিশ্রণ। পুংকেশর ১০টি। সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত ফুল ফোটে। ফুলের পরে ফল। ফল শুঁটি ধরনের বাঁকানো। কাঁচা ফলের রং হালকা সবুজ এবং পাকা ফল খয়েরি বা কালচে লাল। ফলে কয়েকটি বীজ থাকে। বীজের রং হালকা বাদামি। বীজ থেকে বংশ বৃদ্ধি। ডিভিডিভি গাছ বাংলাদেশ সহ বিভিন্ন জায়গায় পাওয়া যায়। এই গাছের বাকল, মূল, ফল ও বীজ ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
উপকারিতাঃ
১। ডিভিডিভি গাছের বাকল পানি দিয়ে রস করে হালকা গরম করে প্রতিদিন সকালে খেলে গোদ রোগ দ্রুত ভালো হয়।
২। ডিভিডিভি গাছের বীজ রস করে খেলে অর্শ ভালো হয়।
৩। ডিভিডিভি গাছের বাকল রস করে বার্লির সাথে মিশিয়ে সেবন করলে অতিসারে উপকার পাওয়া যায়।
৪। ডিভিডিভি গাছের ছাল পানিতে সিদ্ধ করে ঠান্ডা করে খেলে প্রতিদিন দুই তিনবার সেবন করলে রক্ত আমাশয় ভালো হয়।