অনন্তমূল
অনন্তমূল (Indian Sarsaparilla) সরু এবং লতা জাতীয় উদ্ভিদ। এর বৈজ্ঞানিক নামঃ Hemidesmus indicus (Linn.) R. Br.। পাতা লোমযুক্ত এবং কাণ্ডের দুদিকে জন্মায়। কিছুটা ডিম্বাকৃতির লম্বা এবং আগার দিকটা মোটা থাকে। ফলের বাইরের দিকের রং সবুজ আর বেগুনী। বীজ ছোট এবং চ্যাপ্টা, রং কালো। গাছের পাতার মাঝখানে সাদা দাগ থাকে। বাংলাদেশের সর্বত্রই বিশেষ করে উঁচু ভূমিতে জন্মে। বর্ষায় ফুল ফুটে। আশ্বিন মাসে ফল পাকে। এ সময় চাষাবাদ করা যায়। এর ক্রমশ সরু হয়ে মাটির অনেক নীচে চলে যায়। কোথাও কোথাও শেষ পাওয়া যায় না। বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলের শাল বনে এটি বেশী পাওয়া যায়। অনন্তমূলের ভেষজ গুণাগুণ রয়েছে।
রাসায়নিক উপাদানঃ
মূলের প্রধান উপাদান কুমারিন ও উদ্বায়ী তেল। তাছাড়াও এতে স্টেরল, টার্পিন, অ্যালকোহল, লুপিয়ল, স্যাপোনিন ও ট্যানিন বিদ্যমান।
উপকারিতাঃ
১। অনন্তমূল বেটে, গরুর দুধের সঙ্গে জ্বাল দিয়ে দই পাততে হবে। সন্ধ্যার সময় এটা করা দরকার। পরের দিন সেই দই খেলে অর্শ রোগ অবশ্যই উপকার হবে। সঙ্গে সঙ্গে খাবারে রুচি এবং ক্ষিদে বাড়বে।
২। গরুর দুধ দিয়ে অনন্তমূল বেটে খাওয়ালে খুবই তাড়াতাড়ি রোগী অসহ্য যন্ত্রণার হাত থেকে মুক্তি পায়।
৩। ভেড়ার দুধে শুকনো অনন্তমূল ঘষে মাঝে মাঝে ক্ষতস্থানে লাগালে জিভ ও মুখের ঘা সারে।
৪। অনন্তমূল ছোট ছোট করে কেটে পানিতে সারারাত ভিজিয়ে সে পানি পরিষ্কার পাতলা কাপড় দিয়ে ছেঁকে পান করলে বেশি প্রসাব হয়। এ ছাড়া মূত্র রোগে খুবই উপকার পাওয়া যায়।
৫। শুকনো অনন্তমূল গুঁড়ো, সকালে খালিপেটে একগ্লাস ঠাণ্ডা পানিতে দিয়ে খেলে ক্ষুধা ও হজমশক্তি বাড়ে।
৬। শরীরে পিত্ত বাড়লে বিশেষ করে ভাদ্র ও আশ্বিন মাসে হাত-পায়ের তালু জ্বালা করে। তাহলে অনন্তমূল শিলে বেটে দু’চামচ চিনি মিশিয়ে ঠাণ্ডা পানিতে শরবত বানিয়ে খেলে পিত্ত কমে এবং হাত পায়ের তলুর জ্বালাপোড়া দূর হয়।