Logo
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারি, ২০২৫
ভেষজ গাছ হাতিশুঁড়ের ঔষুধি গুনাগুণ

ভেষজ গাছ হাতিশুঁড়

Desk | আপডেট : ১৩ এপ্রিল, ২০২০ ০২:০২
ভেষজ গাছ হাতিশুঁড়

হাতিশুঁড় এক প্রকার একবর্ষজীবী আগাছা জাতীয় উদ্ভিদ। একে হাতিশুঁড়ি, হাতিশুণ্ডি, হস্তীশুণ্ডি, শ্রীহস্তিনী, মহাশুণ্ডি ইত্যাদি নামেও ডাকা হয়। এর বৈজ্ঞানিক নাম Heliotropium indicum এবং ইংরেজি নাম Indian heliotrope। এটি এশিয়া মহাদেশের উদ্ভিদ।সারা বছর ফুল ফোটে তবে বর্ষাকালে বেশি ফুটতে দেখা যায়। গর্ভাশয় চারখণ্ডিত। ফল ও বীজ ক্ষুদ্র। এই গাছে নানারকম জৈব উপাদান পাওয়া গেছে। যেমন ইনডিসিন, পাইরোলিজিডিন এলকালয়েড্স, হেলিওট্রিন ইত্যাদি। শিকড়ে আছে এসট্রাডিওল।আজকের লেখায় জানবো এই গুণে ভরপুর ভেষজ গাছের ঔষুধি গুনাগুণ।

চলুন তাহলে এবার জেনে নেওয়া যাক এর ঔষুধি গুনাগুণঃ

১। ফুলোয়- হঠাৎ ঠান্ডা লেগে হাতে পায়ের গাঁট ফুলে গেলে (এটা সাধারণতঃ কফের বিকারে হয়) এই হাতিশুঁড় পাতা বেটে অল্প গরম করে ঐ সব ফুলোর জায়গায় লাগালে ওটা কমে যায়।

২। আঘাতের ফুলায়- এই পাতা বেটে গরম করে ঐ আঘাতের জায়গায় লাগালে ব্যথা ও ফুলো দুইই চলে যায়।

৩। বাগীর ফুলোয়- ঊরু ও তলপেটের সন্ধিস্থানে অর্থাৎ কুচকীতে যেটা হয় তার নামই বলা হয় বাগী, ডান বা বাম যে কোন দিকেই হতে পারে। সাধারণঃ এটা যৌন সংসর্গের সময় অস্বাভাবিক অবস্থানের জন্য অথবা মেহ বা ঔপসর্গিক মেহ (গণোরিয়া) রোগাগ্রস্ত লোকগুলি এই রোগের বেশি আক্রান্ত হতে দেখা যায়। এক্ষেত্রেও ঐ পাতা বেটে অল্প গরম করে লাগালেও কমে যায়।

৪। রিউমেটিকে- এই বাতে ফুলো থাকতেও পারে আবার নাও থাকতে পারে। এগুলি সাধারণতঃ অস্থির সন্ধিস্থানে (গাঁটে) বেশী হয়। এ ক্ষেত্রে এরন্ড তৈলের (রেডির তেল) সঙ্গে এই পাতার রস বা পাতা বাটা দিয়ে পাক করে ছেঁকে নিয়ে সেই তৈল গাঁটে লাগাতে হয়। রেডির তেল বৈদ্য দোকানে পাওয়া যায়।

৫। বিষাক্ত পোকার কামড়ে- জ্বালা করে কোন কোন ক্ষেত্রে ফুলেও যায়, সে সময় এই পাতার রস করে লাগালে ওটা কমে যায়।

৬। শ্লেষ্মা জ্বরে- সর্দিতে বুক ভার, সেক্ষেত্রে এই পাতার ২ চামচ একটু গরম করে ছেঁকে নিয়ে খেতে দিতেন প্রাচীন বৈদ্যরা। এর দ্বারা সর্দিটা বমি হয়ে বেরিয়ে যায়।

৭। টায়ফায়েড জ্বরে- পিপাসা প্রবল থাকে, এ ক্ষেত্রে ঐ পাতার রস গরম করে ছেকে ঐ রস ১০ ফোঁটায় একটু জল মিশিয়ে খেতে দিতে হয়। আধ ঘন্টা অন্তর দুই/তিন বার খাওয়ালে এই উপসর্গটা প্রশমিত হয়, তবে দুই তিন বারের বেশী খাওয়ানো উচিত নয়।

৮। ফেরিনজাইটিসে- অথবা লেরিন জাইটিস হলে পাতার রস ২ চামচ আধ কাপ অল্প গরম জলে মিশিয়ে গারগেল করতে হয়। প্রত্যহ সকালে বিকালে দুই বার করতে পারলে ভাল। এমন কি গলার মধ্যে ক্ষত ভাব দেখা দিলে সেটাও সেরে যায়। তবে এসব ক্ষেত্রে এর সঙ্গে ২/৩ চামচ বাসক পাতার রস একটু গরম করে প্রত্যহ একবার করে খেতে পারলে কফের বিকারটা নষ্ট হয়।

এছাড়া এক্জিমায়- এই পাতার রস লাগালে কমে যায়।এই পাতা বেটে গরম করে ঐ আঘাতের জায়গায় লাগালে ব্যথা ও ফুলো দুইই চলে যায়।

উপরে