বরুণ/বন্না গাছ
বরুণ/বন্না গাছ
বরুণ(Caper tree) মাঝারি ধরনের প্রচুর শাখা-প্রশাখাবিশিষ্ট পত্রঝরা গাছ। এর বৈজ্ঞানিক নাম Cratraeva nurvala Buch-Ham. Syn. c. religiosa Hook.। গাছের ছাল ছাই রঙের, তাতে সাদা বিন্দু বিন্দু দাগ আছে। পাতা মসৃণ, এক বোঁটায় তিনটি করে পাতা থাকে। উপরিভাগ গাঢ় সবুজ ও নিচের দিকটা হালকা রঙের। ফুল হালকা ঘিয়ে রঙের আর কেশরগুলো লম্বা দেখতে অনেকটা বিড়ালের গোঁফের মতো। ফেব্রুয়ারি মাসে গাছের পাতা ঝরে যায়। মার্চ-এপ্রিলে আবার পাতা গজায়। তখন ফুল হয় ও পরে ফল হয়। ফল দেখতে অনেকটা কদবেলের মতো, ব্যাস ৩-৪ সে.মি.। প্রতিটি ফলে অনেক বীজ থাকে। গ্রাম বাংলায় বরুণকে বন্নাও বলা হয়। বাংলাদেশের সর্বত্র এই গাছ জন্মে।
উপকারিতাঃ
১। মুখে ছত্রাকজনিত মেছতা দেখা দিলে বরুণ গাছের ছাল ছাগলের দুধে ঘষে একবার করে মেছতায় লাগালে দাগ হালকা হয়ে আসবে এবং ১৫/২০ দিন ব্যবহারে সম্পূর্ণ সেরে যাবে।
২। শরীরে চুলকানি ও জ্বালা হলে, বরুণ ছাল ও সমপরিমাণ গোক্ষুর বীজ (Tribulus ternestris) একসাথে টুকরা করে পানিতে সেদ্ধ করে এককাপ থাকতে নামিয়ে ছেঁকে ঐ ক্বাথটা ৪/৫ দিন সকালে খেলে গায়ের জ্বালাটা কমবে এবং চুলকানিও থাকবে না।
৩। বরুণ ছাল টুকরা করে পানিতে সেদ্ধ করে ২ কাপ থাকতে নামিয়ে ছেঁকে ঐ ক্বাথটা সকাল-বিকাল দু’বার করে ৩/৪ দিন খাওয়ার পর খেলে পাথর টুকরা হয়ে বেরিয়ে যাবে।
৪। বরুণ ছালের ক্বাথ পিত্তথলির নিঃসরণ বাড়াতে এবং এভাবে ক্ষুধামান্দ্য দূর করে। খাওয়ার সময় উপস্থিত, কিন্তু ক্ষুধা নেই বা খাওয়ার ইচ্ছা নেই, প্রস্রাবের পরিমাণও কম। এক্ষেত্রে বরুণ ছাল ২ কাপ পানিতে সেদ্ধ করে ১ কাপ থাকতে নামিয়ে ছেঁকে প্রতি ঘন্টা অন্তর ৪ বার খেলে অগ্নিমান্দ্য আর থাকবে না।
৫। গাঁটে গাঁটে ব্যাথা ও ফোলা থাকলে তাকে বাত বা রসবাত বলে। এরূপ দেখা দিলে শুকনা বরুণ পাতা পানিতে সেদ্ধ করে ১ কাপ থাকতে নামিয়ে ছেঁকে এর সাথে আধা গ্রাম আদা গুঁড়া মিশিয়ে সকাল-বিকাল দু’বার করে খেলে ব্যথা ও ফোলা দুইই কমে যাবে।